কর্ণাটকের ক্ষমতা থেকে ছিটকে যাওয়ার পথে বিজেপি

বড় জয়ের আশায় থাকা কংগ্রেস ভোটের ফলের ধারা দেখে এরই মধ্যে তাদের সকল প্রার্থীকে রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 06:23 AM
Updated : 13 May 2023, 06:23 AM

ভারতের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত গণনাকৃত ভোটে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলে ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন দলটিকে ১১৮টি আসনে এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এককভাবে সরকার গঠনে তাদের ১১৩টি আসন প্রয়োজন।

রাজ্যের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এগিয়ে আছে মাত্র ৭৪টিতে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামীর জনতা দল (সেক্যুলার) এগিয়ে আছে মাত্র ২৫ আসনে।

বড় জয়ের আশায় থাকা কংগ্রেস ভোটের ফলের ধারা দেখে এরই মধ্যে তাদের সকল বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

রাজ্য কংগ্রেসের নেতা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে দল ১২০টির বেশি আসন পেতে যাচ্ছে।

বিধায়কদের একসঙ্গে রাখার জন্য কংগ্রেস এরই মধ্যে একাধিক রিজোর্ট ভাড়া নিয়ে ফেলেছে বলে খবরও বেরিয়েছে। এ নিয়ে বিজেপি তাদের টিটকারিও মেরেছে।

“কংগ্রেস তার প্রার্থীদেরই বিশ্বাস করে না,” বলেছে তারা।

রাজ্যের এখনকার মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ এস বোম্মাই অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি বলছেন, বিজেপি যে জিতবে সে ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের বিধায়কদের ওপর ভরসা না থাকায় কংগ্রেস এখন অন্য দলের বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তার।

এদিকে জনতা দলের (জেডিএস) নেতা কুমারস্বামী বলেছেন, তার সঙ্গে কোনো দলেরই যোগাযোগ হয়নি।

“আমার ছোট দল। তেমন চাহিদাও নেই, আশা করছি ভালো কিছু হবে,” বলেছেন তিনি।

তবে দলটির অনেক নেতা বলছেন, বুথফেরত জরিপে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ইঙ্গিত পেয়ে কংগ্রেস, বিজেপি উভয় দলই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

ভারতের এ রাজ্যটির বিধানসভার ২২৪ আসনের প্রত্যেকটিতে বুধবার ভোটগ্রহণ হয়। এখন ৩৬টি গণনাকেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে।

কর্ণাটকে সাধারণত এক দল পর পর ‍দুই বার ক্ষমতায় থাকতে পারে না, সেই রীতি ভাঙতে বিজেপি এবার নরেন্দ্র মোদীকেও মাঠে নামিয়েছিল। অন্যদিকে কংগ্রেসের প্রত্যাশা ছিল, কর্ণাটকে জিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের উদ্দীপ্ত রাখা, বিজেপিবিরোধী প্রধান শক্তি হিসেবে নিজেদের পরিচয়কে আরও শক্ত করা।

এবার রাজ্যটির বেশিরভাগ আসনেই মূলত ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আসনেই কংগ্রেস, বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন জেডিএসের প্রার্থীরাও।

দিল্লি, পাঞ্জাবে ক্ষমতায় থাকা আম আদমী পার্টি (এএপি) আর শরদ পাওয়ারের ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টিও (এনসিপি) কিছু আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তবে তারা আরব সাগরের কোল ঘেঁষে থাকা রাজ্যটির ক্ষমতায় কে যাবে তা নির্ধারণে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

২০১৮ সালের সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১০৪টি আসনে জিতেছিল। কংগ্রেস পেয়েছিল ৮০টি, জেডিএস ৩৭টি।

বেশি আসন পাওয়ায় প্রথমে বিজেপির বিএস ইয়েদুরাপ্পা সরকার গঠন করলেও আস্থা ভোটের আগে ওই সরকার পদত্যাগ করে। এরপর কংগ্রেস জেডিএসকে সঙ্গে নিয়ে জোট সরকার গড়লেও তার স্থায়ীত্বকাল ছিল মাত্র ১৪ মাস।

১৬ বিধায়ক দল বদলে বিজেপিতে যোগ দিলে জোট সরকার পড়ে যায়, ক্ষমতায় ফেরে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দলটি।