অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন বন্ধ হবে কবে?

অপ্রয়োজনীয় প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ঠেকাতে হাই কোর্ট ছয় মাসের মধ্যে নীতিমালা করার আদেশ দেওয়ার পর পেরিয়ে গেছে তিন বছর।

আইরিন সুলতানাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2022, 07:17 PM
Updated : 22 August 2022, 07:17 PM

সায়মা তানহা যখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, চিকিৎসক তাকে বললেন, “বি রেডি ফর সিজার”।

ডাক্তার প্রথমে বললেন, বাচ্চা উপরে উঠে গেছে। তারপর বললেন ‘উচ্চতা কম’ বলে সিজার দরকার। তানহা এখন বোঝেন, প্রয়োজন না থাকলেও তাকে আসলে সে সময় সি সেকশন (সিজারিয়ান সেকশন) করাতে বাধ্য করা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের হিসাবে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে অন্তত আট লাখ ৬০ হাজার সি-সেকশন হয়েছিল, এর ৭৭ দশমিক ১ শতাংশই ছিল ‘অপ্রয়োজনীয়’। আর ওইসব অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশনের পেছনে পরিবারগুলোর খরচ হয়েছে মোট ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।

এরকম অপ্রয়োজনীয় সিজার বা প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ( যা সিজারিয়ান সেকশন বা সি-সেকশন নামেও পরিচিত) ঠেকাতে ২০১৯ সালে হাই কোর্ট এক আদেশে সরকারকে ছয় মাসের মধ্যে একটি নীতিমালা করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এরপর পেরিয়ে গেছে তিন বছর; সরকারের তরফ থেকে একটি খসড়া জমা দেওয়া হলেও বিষয়টি চূড়ান্ত করার কাজ থমকে আছে।

কোন কোন পরিস্থিতিতে সি-সেকশন করা যাবে, সে বিষয়েও দিক নির্দেশনা রাখা হয়েছে ওই খসড়া নীতিমালায়।

তবে বিষয়গুলো চূড়ান্ত করে আইনের অন্তর্ভুক্ত করা না হলে, সে অনুযায়ী বিধিমালা প্রণয়ন না হলে অপ্রয়োজনীয় সি সেকশন বন্ধে পুরোপুরি সফল হওয়া যাবে বলে মনে করেন না ইশতিয়াক মান্নান, যিনি ওই খসড়া করার সময় বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলেন।

অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন কী?

কথিত আছে, খ্রিস্টের জন্মেরও বহু আগে প্রাচীন রোমের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজারকে মা আউরেলিয়ার পেট কেটে বের করা হয়েছিলো। সে কারণে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যতিক্রম এ পদ্ধতিকে বলা হয় 'সিজারিয়ান', আর এ পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া শিশুদের বলা হয় 'সিজারিয়ান বেবি'।

সাধারণ নিয়ম হল, প্রসূতির শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে মা ও সন্তানের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেবেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কিছু চিকিৎসক ও হাসপাতালের ‘অতিরিক্ত ব্যবসা করার মানসিকতার’ কারণে বিনা প্রয়োজনে সি সেকশনের পরামর্শ দেওয়া হয় বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

আবার সি-সেকশনের কারণে গর্ভাশয়ের ক্ষতি, অস্বাভাবিক প্ল্যাসেন্টেশন, এক্টোপিক গর্ভাবস্থা, ভ্রূণের মৃত্যু, সময়ের আগে শিশুর জন্মের মত ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি শিশুর হরমোন, শারীরিক ও অন্যান্য বিকাশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এ অস্ত্রোপচার৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক হালিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, ”প্রসূতির ঝুঁকির ক্ষেত্রে কিছু স্বাস্থ্য জটিলতার ইনডিকেশন থাকে, যেমন ফ্লুইড একদম কমে যাওয়া। আবার আগে সিজার করা হলে পরেও সি-সেকশন করানোর মত পরিস্থিতি হয়। এর বাইরে, অর্থাৎ যদি কারণ ছাড়াই সিজার করা হয়, তবে সেটা আননেসেসারি সি-সেকশন হবে।”

এই চিকিৎসক বলছেন, গর্ভের সন্তান ও মায়ের শরীর ভালো থাকলে ‘ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি’ বা স্বাভাবিক প্রসব করাতে হবে।কারণ সি-সেকশনের খারাপ দিক রয়েছে।

”অপারেশনের সময় ব্লিডিং হতে পারে অনেক। পরে ব্যথা-ইনফেকশন হতে পারে। মায়ের ডিপ্রেশনও হতে পারে; বাচ্চার যত্ন-আত্তিতেও তখন সমস্যা হয়। এছাড়া অপারেশনে জরায়ু কেটে ফেলার পরিস্থিতিও হয় কখনও কখনও।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিচারে, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সি-সেকশন গ্রহণযোগ্য হতে পারে। বাংলাদেশে ২০০৪ সালে মোট প্রসবের ৪ শতাংশ যেখানে সি সেকশনে হত, ২০১৬ সালে তা ৩১ শতাংশে পৌঁছায়।

কারণ ছাড়াই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব রোধে চিকিৎসক, গবেষক, অধিকারকর্মী, দাতা সংস্থা ও গণমাধ্যমের সমন্বয়ে ২০১৭ সাল থেকে ‘স্টপ আননেসেসারি সি-সেকশন’ নাম একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনও চালু হয়।

অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন কেন?

শারমিন বন্যা একজন প্রশিক্ষিত নার্স। তার ভাষায়, এখন স্বাভাবিক প্রসবে গর্ভবতী মায়ের আগ্রহ কমে গেছে, কারণ হাসপাতালে গর্ভবতী মাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেওয়ার ’নানা রকম পন্থা’ রয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমার রোগীদের একজনের বাচ্চার ওজন তিন কেজির বেশি বলে তাকে সিজার করানোর কথা বলেছিল। কিন্তু পরে আমি তার নরমাল ডেলিভারি করাই। তিন দিন বয়সে বাচ্চার ওজন হয়েছিল তিন দশমিক আট কেজি।”

গর্ভবতী মাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেওয়ার কাজটি কীভাবে করা হয়, সেই বিবরণ দিলেন সায়মা তানহা, যার কথা এ প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছিল।

তিনি জানান, প্রথম সন্তান যখন হয়, তখন তিনি ছিলেন চট্টগ্রামে। বয়স কম থাকলেও কোনো শারীরিক জটিলতা তার ছিল না। তারপরও যখন ডাক্তার সি সেকশনের কথা বললেন, ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন খুব। বাসায় ফিরে কান্নাকাটিও করেছিলেন।

”ডাক্তার আমাকে সাত মাসের সময় বললেন, বাচ্চা উপরে উঠে আছে। সিজার করাতেই হবে।বয়স কম ছিল, আমি অত বুঝতে পারিনি।”

এখন তানহার বয়স ৩২ বছর, থাকেন ঢাকার কলাবাগানে। অভিজ্ঞতা থেকে এখন তার কাছে অনেক কিছুই স্পষ্ট।

“পরে বুঝেছি সাত মাসের সময় ডাক্তার ওরকম সিদ্ধান্ত দিতেই পারে না। সাত মাসে বেবি যদি উপরের দিকে উঠে থাকে, বাকি তিন মাসে তো বেবি মুভ করবে। আমার খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী একজন চিকিৎসক, তিনি ওই সময় আমার সব রিপোর্ট দেখে বলেছিলেন, আমার কোনো কমপ্লিকেশন নেই।”

সায়মা তানহার উচ্চতা পাঁচ ফুট এক ইঞ্চি, এ বিষয়টিকেও সে সময় সি সেকশনের যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন তার চিকিৎসক।

“যখন আমি বললাম রিপোর্টে জটিলতা তো নেই, ডাক্তার বললেন, আমার হাইট কম; নরমাল ডেলিভারি আমি পারব না। তিনি শেষ পর্যন্ত আমার সিজার করিয়েছিলেন। প্রথম বাচ্চা এভাবে সিজারে হওয়ায় আমার পরের সন্তানের সময়ও সিজার করাতে হয়।”

কোথায় আটকে?

অপ্রয়োজনীয় সিজার বা প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য আইসিডিডিআরবি, ব্র্যাক ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি প্রচারাভিযান চালিয়ে আসছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

যখন এ প্রচারাভিযান শুরু হয়, সে সময় বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলেন ইশতিয়াক মান্নান, তিনি এখন অন্য একটি সংস্থায় কাজ করছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইশতিয়াক মান্নান বলেন, দেশে সি-সেকশন বেড়ে যাচ্ছে, এর ক্ষতিকর দিক কী, এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার– এসব বিষয়ে তারা সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করেন তখন।

“এর মধ্যে আমরা একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছিলাম। তাতে দেখানো হয়েছিল সিজারিয়ান করানোর কারণে পকেট থেকে কী পরিমাণ অর্থ বেরিয়ে যাচ্ছে। এতে করে মানুষ আর্থিকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়ছে।”

২০১৯ সালে ওই বিশ্লেষণ প্রকাশের সপ্তাহখানেক পর হাই কোর্টে দুটো রিট আবেদন হয়। প্রথমটি করেছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দ্বিতীয়টি বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম।

ওই বছর জুন মাসের শেষ দিকে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের মধ্যে সিজারিয়ান সেকশন (সি-সেকশন) নজরদারিতে নীতিমালা চেয়ে আদেশ দেয়।

রিট আবেদনের পক্ষে সে সময় শুনানি করেছিলেন আইনজীবী রাশনা ইমাম। তিনি জানান, হাই কোর্টের আদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করে। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ওই নীতিমালা আদালতে জমা দেওয়া হয়।

কিন্তু এরপর করোনাভাইরাসের মহামারী শুরু হলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। অংশীজনরাও আর এগোতে পারেননি।

রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী রাশনা ইমাম বলেন, “খসড়া নীতিমালা জমা দেওয়ার পর আমরা কোর্ট থেকে কিছু সময় চেয়েছিলাম। ব্লাস্টের পক্ষ থেকে আমরা বিশেষজ্ঞ মত দিতে চাচ্ছিলাম যে ওই নীতিমালার উপর আরও কোনো ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন আছে কি না। তারপর কিছু কিছু পরিবর্তন আমরা এরমধ্যে প্রস্তাব করেছি। তারপরই তো মহামারী চলে এল।”

অবশ্য এরপরও ‘কিছু কাজ’ হয়েছে জানিয়ে ইশতিয়াক মান্নান বলেন, “এর মধ্যে মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু ফরম তৈরির কাজ করেছে- যাতে প্রত্যেকটি হাসপাতাল, সরকারি হোক, বেসরকারি হোক, কিছু তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে।

“সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকে একজন স্পেশালিস্ট পদায়ন করার কথা; যেন সরকারকে কারিগরি সহায়তা দেওয়া যায়।”

নীতিমালা তৈরিতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের নিয়ে এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠনের নির্দেশনাও দিয়েছিল হাই কোর্ট। সে অনুযায়ী একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়। কিন্তু ওই কমিটির কোনো সভা আর হয়নি বলে জানান ইশতিয়াক মান্নান।

তিনি বলেন, সংক্রমণ কমে আসায় এখন নীতিমালার অগ্রগতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিৎ, কারণ অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধ হয়নি, বরং বেড়ে চলেছে।

রাশনা ইমাম জানান, এখন তারা ওই খসড় নীতিমালা সংশোধন করতে তাদের সুপারিশগুলো জমা দেবেন।

“এরপর আমরা চূড়ান্ত শুনানির দিকে যাব, যেখানে নীতিমালার উপর কোর্টের অনুমোদন নিতে হবে রায়ের মাধ্যমে।”

কী আছে খসড়ায়?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আজিজুল আলিম জানান, সি-সেকশন কমিয়ে স্বাভাবিক প্রসবের হার বাড়ানো লক্ষ্যে এই নীতিমালায় স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রোগী ও সেবাদানকারীর অধিকার সুরক্ষায় বর্তমান আইনি কাঠামো পুনরায় যাচাই শেষে এর দুর্বল দিকগুলো শনাক্ত করে সংশোধনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে জবাবদিহিতা আনতে রেকর্ড রাখা ও রিপোর্টিং সিসটেম নিয়েও বলা হয়েছে।

আইনজীবী রাশনা ইমাম বলেন, “কোনো হাসপাতাল বা ডাক্তারের বিরুদ্ধে যদি কেউ মামলাও করতে যায়, সেক্ষেত্রে যদি কোনো ধরনের রেকর্ডই খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে মামলায় কোনো প্রমাণ উপস্থাপন সম্ভব হবে না। আর প্রমাণ না পেলে কোনো আদালতই দোষী সাব্যস্ত করতে পারবে না।”

স্বাস্থ্যসেবায় নজরদারি বাড়াতে নিয়মিত মেডিকেল অডিট রাখার কথাও বলা হয়েছে খসড়ায়। যেসব সি-সেকশন করা হয়, সেগুলোর রেকর্ড থাকলে পরে প্রয়োজনে দেখা যাবে, আদৌ অস্ত্রোপচার করা জরুরি ছিল কি না।

রাশনা ইমাম বলেন, “কোন কোন পরিস্থিতিতে সি-সেকশন করা যাবে তা নিয়েও নির্দেশনা দেওয়া আছে এই খসড়া নীতিমালায়। এর সঙ্গে চিকিৎসকদের নিয়মিত নৈতিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া রয়েছে।”

সরকারি উদ্যোগ কী?

সি-সেকশন যার জন্য জরুরি নয়, তাকে সিজার করানো ‘সম্মানজনক নয়’ বলে মন্তব্য করলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাননীয় মন্ত্রীসহ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমরা ৫০০ উপজেলায় এফডব্লিউসিগুলোকে (পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র) টোয়েন্টিফোর বাই সেভেন হিসেবে লোকবল ও সুবিধা দিয়ে সুসজ্জিত করব, যেন মা-বোনদের আর বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে না হয়।”

কিছু দিন আগে জয়পুরহাট ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সচিব বলেন, সেখানে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে তিনি দেখেছেন, ৭৮ শতাংশ স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে শতভাগই সি-সেকশন।

“সরকারিভাবে ইউনিয়ন-উপজেলা পর্যায়ে সেসব কেন্দ্র আছে, সেখানে আমাদের সহকর্মীদের অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে আমরা মোটিভেট করতে চাই। চিকিৎসকদের সঙ্গেও আমরা কাজ করছি নৈতিকতার বিষয়ে।”

নীতিমালা কি বিধিমালা হবে?

ইশতিয়াক মান্নান বলেন, আদালতের প্রক্রিয়ায় ওই খসড়া নীতিমালা হয়ত চূড়ান্ত হবে। কিন্তু তার পরের ধাপ হওয়া উচিত ওই নীতিমালা থেকে আইন করা, সেখান থেকে বিধিমালা তৈরি করা।

“এটা যদি কেবল নীতিমালা থাকে, এটা মানার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সেজন্য (আইন করার বিষয়ে) আমাদের মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিৎ, আমরা করব।

“নীতিমালা যতক্ষণ না বিধিমালা হবে, ততক্ষণ প্রাইভেট সেক্টর হাসপাতাল, এনজিও হাসপাতাল, সরকারি হাসপাতাল কিন্তু এই নীতিমালা মানতে বাধ্য নন; এবং তখন কোনো আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আজিজুল আলিম বলেন, “নীতিমালা এখনও বিবেচনাধীন হাই কোর্টে। নীতিমালা অনুমোদন হলে গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। বাকিটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।”