গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়: আর্টিকেল নাইনটিন

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে আলোকিত বাংলাদেশ ও গাজী টেলিভিশনসহ (জিটিভি) কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদকর্মীদের ছাঁটাইয়ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2020, 10:25 AM
Updated : 27 April 2020, 10:53 AM
সোমবার এক বিবৃতিতে ওই সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির নোটিশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বানও জানান সংস্থার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল।

তিনি বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোনোভাবেই জবাবদিহির উর্ধ্বে নয়। তাই গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে; পাঠক, দর্শক তথা দেশের মানুষের কাছে তাদের সব কর্মকাণ্ড ও নেওয়া পদক্ষেপের জবাব দিতে হবে।”

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাতে সম্প্রতি কয়েকটি ছাঁটাইয়ের ঘটনার বর্ণনাও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে আর্টিকেল নাইনটিন।

এতে বলা হয়, জানা গেছে, ২৪ এপ্রিল তারিখে ২১ সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পৃথক চিঠি দিয়ে চাকুরিচ্যুত করে আলোকিত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। একই দিন কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দুইজন নিউজরুম এডিটরসহ আরও কয়েকজন কর্মীকে চাকুরি থেকে অব্যাহতির নোটিশ দেয় জিটিভি কর্তৃপক্ষ।

এর আগে করোনাভাইরাসের অজুহাত দেখিয়ে ২ এপ্রিল আলোকিত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ পত্রিকাটির ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে দেয়।

তখন সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে এবং বেতন বকেয়া রেখেই কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সময় তারা চাকুরিচ্যুতির শঙ্কাও প্রকাশ করেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সম্মুখসারির কর্মী হিসেবে সংবাদকর্মীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে আর্টিকেল নাইনটিনের কর্মকর্তা ফারুখ ফয়সাল বলেন, “সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও এই দুর্যোগকালে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাউকে ছাঁটাই না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

“অথচ এমন প্রেক্ষাপটেও কিছু গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা অন্যায়, নির্মম ও অত্যন্ত হতাশাজনক। এই পরিস্থিতি গণমাধ্যকর্মীদের স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।”

সঙ্কটময় পরিস্থিতিতেও বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম তাদের কর্মীদের নিয়মিত বেতন প্রদান করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে প্রকাশনা ও সম্প্রচার অব্যাহত রাখতে নিজেদের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণসহ বিকল্প ব্যবস্থা চালু ও কর্মীদের বাসা থেকে অফিস করার ব্যবস্থাও নিয়েছে।

এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ফারুখ ফয়সল বলেন, “যে সব গণমাধ্যমকর্মী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন তাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও তাদের জন্য ঝুঁকি-ভাতা প্রচলন, অসুস্থ হলে চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ ও এই বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে যাওয়া-আসার জন্য নিরাপদ পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।”