প্লেবয় এন্টারপ্রাইজ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজের বাড়ি প্লেবয় ম্যানশনে ৯১ বছর বয়সী হেফনারের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
১৯৫৩ সালে বাড়ির রান্নাঘর থেকে প্লেবয়ের প্রকাশনা শুরু করেছিলেন হেফনার। এক সময় তা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ম্যাগাজিনে পরিণত হয়।
গত শতকের সত্তরের দশকে প্লেবয় যখন সাফল্যের শীর্ষে, সে সময় মাসে ৭০ লাখ কপি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে এই ম্যাগাজিন।
সংবাদমাধ্যমে হেফনার প্রায়ই চিত্রায়িত হয়েছেন একদল স্বর্ণকেশী পরিবেষ্টিত হয়ে জীবন যাপন করা কামুক বুড়ো হিসেবে। টাইম ম্যাগাজিন তাকে ‘প্রোফেট অব পপ হেডোনিজম’ হিসেবেও বর্ণনা করেছিল।
বিবিসি লিখেছে, হিউ হেফনার কোটি কোটি পুরুষের জন্য এক ফ্যান্টাসির দুনিয়া তৈরি করে গেছেন। তবে অধিকাংশ পাঠকের সঙ্গে তার পার্থক্য হল, সেই ফ্যান্টাসির জীবন হেফনার নিজে যাপন করে গেছেন।
হেফনারের ছেলে কুপার হেফনার বিবৃতিতে বলেন, বহু মানুষ তার বাবাকে ‘মিস করবে’।
১৯২৬ সালের ৯ এপ্রিল শিকাগোতে জন্ম নেন হিউ মারস্টন হেফনার। তার শিক্ষক বাবা-মা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে ছিলেন কট্টর।
মনোবিজ্ঞানে ডিগ্রিধারী হেফনার যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘রাইটার’ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরে মেনস ম্যাগাজিন এসকোয়ারে কপিরাইটার হিসেবে কাজ করেন।
আট হাজার ডলার ধার করে ১৯৫৩ সালে প্লেবয় প্রকাশের উদ্যোগ নেন হেফনার, যাতে তার মায়ের অবদান ছিল এক হাজার ডলার।
প্লেবয়ের প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছিল মেরিলিন মনরোর একটি নগ্ন ছবি দিয়ে। ১৯৪৯ সালে ক্যালেন্ডারের জন্য তোলা ওই ছবি হেফনার কিনেছিলেন ২০০ ডলার দিয়ে। আর ওই সংখ্যা বিক্রি হয়েছিল ৫০ হাজার কপি।
পরের কয়েক দশকে পামেলা অ্যান্ডারসন, ম্যাডোনার মত বহু তারকা বিবসনা হয়ে প্লেবয়ের প্রচ্ছদে এসেছেন। হেফনারের ব্যবসা ছড়িয়েছে ক্লাব আর ক্যাসিনোতেও।
বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আমেরিকায় বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হতে থাকা নতুন একটি প্রজন্মের জন্য হেফনার তৈরি করে দিয়েছেন নতুন এক জীবনধারা।
হেফনার সমকামী অধিকারের পক্ষে বলে গেছেন, দেদার পয়সা বিলিয়ে দানবীর পরিচিতি পেয়েছেন। যৌনাচারে বিপ্লবী জীবন যাপনের কারণে সব সময় ছিলেন আলোচনায়।
বিবিসি লিখেছে, আলোচিত-সমালোচিত এই প্রকাশক কেবল একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেননি, তিনি তৈরি করে দিয়ে গেছেন একটি লাইফস্টাইল।