বিভিন্ন ধরনের একজিমা রয়েছে। তবে সাধারণ কিছু ধাপ অনুসরণ করলে ত্বকের এই সমস্যা এড়ানো যায়।
Published : 21 Nov 2022, 05:49 PM
যে কোনো মানুষের যে কোনো বয়সে একজিমা দেখা দিতে পারে।
সাধারণত অস্বস্তিকর, শুষ্ক ত্বকে চুলকানির মতো এই চর্মরোগ দেখা দেয়।
এই সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক’য়ের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ টিফ্যানি লিবি বলেন, “নানান ধরনের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন রকম একজিমা দেখা দেয়।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি জানান, ‘অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস’ সবচেয়ে সাধারণ একজিমা। এটা সাধারণত উজ্জ্বল বর্ণের ব্যক্তিদের মাঝে গোলাপি-লাল ফুসকুড়ি হিসেবে দেখা দেয়।
গলা, কনুই, হাঁটূর ভাঁজের অংশ, গোড়ালি ইত্যাদি স্থানে বেশি ওঠে। অপেক্ষাকৃত শ্যামলা ত্বকে একজিমা বেগুনি, বাদামি, ধূসর, রুক্ষ র্যাশ বা ফুসকুড়ি হিসেবে দেখা দেয়।
একজিমা আক্রান্ত ত্বকের জন্য চাই ধারাবাহিক যত্ন
ত্বকের সুরক্ষার স্তর কাজ না করলে এই সমস্যা দেখা দেয়। তাই ত্বকের সুস্থতা ও আর্দ্রতা রক্ষা করা এই সমস্যা থেকে বাঁচার প্রধান উপায়।
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য তৈরি প্রসাধনী এই ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা উপকারী।
প্রথম ধাপ: আর্দ্রতা রক্ষাকারী ক্লেঞ্জার
পিএইচ’য়ের ভারসাম্য রক্ষা করে এমন আর্দ্রতারক্ষাকারী, সুগন্ধি মুক্তে এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য তৈরি ফেইসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের ‘এমডিসিএস ডার্মাটোলজি’র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অ্যাডম টিঙ্কেলপা বলেন, “মৃদু, অ্যালকোহল মুক্ত ক্লেঞ্জার একজিমা প্রবণ ত্বকের জন্য উপকারী। যে পণ্য ত্বককে শুষ্ক করে এবং স্বাস্থ্যকর ও প্রাকৃতিক তেল দূর করে সেগুলো ব্যবহার একজিমার মাত্রা বৃদ্ধি করে।”
অ্যালকোহলের পাশাপাশি, অতিরিক্ত সুগন্ধি, রং, এসেনশল অয়েল এবং এক্সফোলিয়েন্ট ব্যবহার একজিমার মাত্রা বাড়ায় বলে জানান তিনি।
সাধারণ পরিষ্কারক বাম, ক্রিম ক্লেঞ্জার, অয়েল ক্লেঞ্জার ও হাইড্রেটিং জেল ক্লেঞ্জার ত্বকের জন্য ভালো। মুখ ধোয়ার সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা এবং স্ক্রাবার ব্যবহার ও অতিরিক্ত ঘষা মাঝা না করা একজিমা প্রবণ ত্বকের জন্য উপকারী।
সন্ধ্যায় বা শরীরচর্চা বা বাইরে থেকে আসার পর মুখ ধোয়া ভালো। সকালে চাইলে মুখ ধুতে পারেন। তবে যাদের ত্বক শুষ্ক ও সংবেদনশীল তাদের মুখ ধোয়ার সময় বেশি করে পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ: ময়েশ্চারাইজার
একজিমা আক্রান্ত ত্বকের যত্নের মূল ভিত্ত হল ময়েশ্চারাইজিং। ত্বকের একজিমা কমাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কয়েক স্তরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার একজিমায় ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
‘হিউমেক্টেন্ট’ দিয়ে পরিচর্যা শুরু করে এরপরে ‘এমলিয়েন্ট ময়েশ্চারাইজার’ ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
হিউমেকটেন্ট: এটা ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে। গ্লিসারিন, ল্যাক্টিক অ্যাসিড, ইউরিরা এবং হায়ালুরনিক এর উদাহরণ।
এমলিয়েন্টস: এগুলো ত্বকের হারিয়ে যাওয়া তেল ফিরিয়ে আনে ও কোমলতা বাড়ায়। কলোইডল ওটমিল, গ্লাইকল এবং গ্লিসারিল স্টিয়ারেইট, সয়া স্টেরলস, স্কোয়ালেন এবং জোজোবা বা কাঠবাদামের তেল ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
অক্লুসিভস: এই ধরনের ময়েশ্চারাইজার ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষার স্তর তৈরি করে ‘ট্রান্সপিডার্মাল ওয়াটার লস’ বা ত্বক থেকে পানি উবে যাওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সেরামাইড, পেট্রোলাটাম, ডাইমেথিকন, শিয়া বাটার এবং খনিজ তেল সাধারণত ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আবার, সংবেদনশীল ত্বকের ধরনের জন্য ‘নন-ইরিটেইটিং ময়েশ্চারাইজার’ বেছে নেওয়া উচিত। দিনে দুবারের কম প্রয়োগ করা যাবে না। আর প্রতিবার ব্যবহারের আগে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ধাপ-৩: সানস্ক্রিন
দিনে সানস্ক্রিন ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। সূর্যালোক একজিমার মাত্রা বাড়ায়। যাদের একজিমা আছে তাদের রাসায়নিক উপাদানে চেয়ে খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে জ্বলুনির মাত্রা কমে।
আরও পড়ুন