নমনীয়তা ধরে রাখার উপায়

শুষ্ক ত্বক নিয়ে অনেকেই ভোগেন। বিশেষ করে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় আর্দ্রতার অভাবে সমস্যা হয় বেশি।

কামরুন নাহার সুমিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2015, 12:06 PM
Updated : 2 Feb 2015, 02:14 PM

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে নিউ ইয়র্কের, সেন্টার ফর ডার্মাটোলজি, কসমেটিক অ্যান্ড লেজার সার্জারি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. ডেভিড ই. ব্যাংকস বলেন, “ত্বক নমনীয় রাখার সবচাইতে কার্যকর উপায় হল শরীরের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখা।”

বিউটিফুল স্কিন: এভরি উইমান’স গাইড’য়ের এই লেখক আরও বলেন, “স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে না রাখলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে।”

কিছু নিয়ম মেনে চললেই ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা সম্ভব।

অতিরিক্ত গোসল না করা

অনেকেরই ধারনা পানি ত্বক আর্দ্র বা নমনীয় রাখে। যা একদম সঠিক নয়। কারণ অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

এ সম্পর্কে ডা. ডেভিড ব্যাংকস বলেন, “ত্বক প্রয়োজনের বেশি ধুলে বা পরিষ্কার করলে, বিশেষকরে গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যায়। ফলে ত্বক স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে।"

পরিত্রাণ পেতে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার

১। গোসলের সময় নির্দিষ্ট করে নিতে হবে।

২। অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করার পরিবর্তে কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে হবে।

৩। ত্বককে কোমল রাখতে ক্ষারযুক্ত সাবান এড়িয়ে বডি ওয়াশ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। আর শুধুই সাবান ব্যবহার করতে চাইলে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যাবে।

তবে অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান এবং ডিটারজেন্ট যেমন সোডা ও পাউডার ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। কারণ এসব পণ্য ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক করে ফেলে।  

৪। গোসলের পর ভেজা ত্বক শুকানোর জন্য হালকা ভাবে মুছতে হবে। কারণ ঘষলে চামড়ায় জ্বালাপোড়া হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা কমে যেতে পারে।

৫। গোসল করার পর পরই ত্বকে উন্নতমানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ভেজা থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বকের স্বাভাবিক যে তেল থাকে তা ভিতরেই আটকে যাবে।

ভেতর থেকে আর্দ্র রাখুন

ত্বকের ভিতর থেকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।  

গ্লাভস বা দস্তানা ব্যবহার করা

ত্বক সুরক্ষিত রাখতে শীত মৌসুমে গ্লাভস বা দস্তানা বেশ কার্যকার।

“গ্লাভস তাপমাত্রা পরিবর্তনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বক নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে”, বলেন ব্যাংকস।

তিনি আরও বলেন, "তবে সমস্যা হচ্ছে গ্লাভস পরার কারণে হাত অতিরিক্ত ঘামতে পারে। ফলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড ঘামের সঙ্গে হয়ে যায়। তাই হাত ঘামনো শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে গ্লাভস খুলে ফেলতে হবে।”

সঠিক ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন

ওটমিল, সয়াবিন, সেরামাইডস (লিপিড অণু), হায়ালরিক অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ত্বকের জন্য ভালো। এক্ষেত্রে মাখন, অলিভ অয়েল, কাঠবাদামের তেল, আভোকাডো'র তেল, নারিকেল তেল ইত্যাদি শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো। তবে ইথাইল অ্যালকোহল যুক্ত মোয়েশ্চারাইজার কেনা উচিত নয়। কারণ এটি ত্বক শুষ্ক করে দেয়।

ব্যাংকস বলেন, “বেশি সময় বাইরে থাকার প্রয়োজন হলে এসপিএফ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই শীতের মৌসুমে এসপিএফ সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার এড়িয়ে যান, যা ঠিক নয়। কারণ সারা বছর ধরেই সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি প্রকৃতিতে খেলা করে।”

রোদে পুড়লে ত্বক শুষ্কই হয় না সঙ্গে স্তরে স্তরে চামড়া উঠিয়ে ফেলে। এটা দীর্ঘ মেয়াদে ত্বকে বলিরেখা ফেলা আর ক্যান্সারের ঝঁকি বাড়ায়।

তাই সব ঋতুতে ত্বক সুরক্ষায় নিয়মিত ‘ময়েশ্চারাইজা’ করুন। যাদের ত্বক শুষ্ক তারা দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে উপকৃত হবেন।