টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিরাময়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

সঠিক খাদ্যাভ্যাস টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিকারে সহায়তা করতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2021, 05:55 AM
Updated : 29 Sept 2021, 05:55 AM

এর এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ কলাম্বিয়া’ এবং ইংল্যান্ডের ‘টিসাইড ইউনিভার্সিটি’র করা যৌথ গবেষণায়।

গবেষকরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩০ থেকে ৭৫ বছর বয়সি প্রায় ২০০ জন প্রাপ্তবয়স্ককে সংগ্রহ করেছিলেন। আর তাদেরকে ১২ সপ্তাহ ধরে একটি নির্দিষ্ট খাবার পরিকল্পনা অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

খাদ্যাভ্যাসে কম ক্যালোরি (প্রতিদিন ৮৫০ থেকে ১,১০০ ক্যালোরি), কম কার্বোহাইড্রেইট (প্রতিদিন ৫০ গ্রামের কম কার্বোহাইড্রেইট) এবং উচ্চ প্রোটিন (প্রতিদিন ১১০ থেকে ১২০ গ্রাম) নির্ধারিত করা হয়েছিল।

পর্যবেক্ষণ চলাকালীন স্বেচ্ছাসেবীরা স্থানীয় ‘ফার্মাসিস্ট’দের সঙ্গে পরামর্শ করে রক্তের গ্লুকোজ কমানোর ওষুধের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পরামর্শ নিয়েছিল।

গবেষকরা ফার্মাসিস্টদের বেছে নিয়েছিলেন কারণ গ্রামাঞ্চলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্করা চিকিৎসকের তুলনায় ফার্মাসিস্টদের কাছে বেশি যান।

‘নেচার কমিউনিকেশন’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, অংশগ্রহণকারীদের এক তৃতীয়াংশ তিন মাসের মধ্যে ওষুধ গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর কারণ হল- তারা নিজের স্বাস্থ্য, রক্তের শর্করা ও রক্তচাপের ওপর সামগ্রিক উন্নতি লক্ষ্য করেছিলেন।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব হেল্থ অ্যান্ড এক্সারসাইজ সায়েন্স’য়ের সহকারী অধ্যাপক এবং গবেষণার সহ-লেখক ড. জোনাথন লিটল এক বিবৃতিতে বলেন, “টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করা যেতে পারে। আবার কখনও কখনও তার ফলাফল বিপরীতমুখীও হতে পারে।”

তার বক্তব্যের সূত্র ধরে ‘ইট দিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, তবে ওষুধের পরিবর্তনের ওপর নজর রাখার সময় রোগীরা কী কী বিষয় বাস্তবায়ন করতে পারে সে সম্পর্কে জানতে সমীক্ষার প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ও ‘টু ডে ডায়াবেটিস ডায়েট: ডায়েট জাস্ট টু ডেইজ এ উইক অ্যান্ড ডোজ টাইপ টু ডায়াবেটিস’য়ের লেখক এরিন পালিনস্কি-ওয়েড, এই গবেষণার ফলাফল দেখে অবাক হননি।

তিনি প্রতিবেদনে বলেন “আগের গবেষণায় দেখা গেছে, কম কার্বোহাইড্রেইট যুক্ত খাবার এই সময়সীমার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ওজন কমাতে পারে।”

পালিনস্কি আরও বলেন, “আগের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, এই পরিবর্তনগুলো বজায় রাখা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু কম ক্যালোরি, কম কার্বোহাইড্রেইট খাদ্য-পরিকল্পনা সীমিত হতে পারে, তাই দীর্ঘমেয়াদে তা মেনে চলা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।”

ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেইট গ্রহণের মাত্রা কমাতে যারা নতুন খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা শুরু করেছেন তাদের ফার্মাসিস্ট, চিকিৎসক বা ডায়াবেটিস প্রশিক্ষকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা ও নিরীক্ষা করানোর বিষয়ে সমর্থন করেন তিনি। 

পালিনস্কির মতে, “এই পরিবর্তন অনেকের ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’র ঝুঁকি বাড়ায় যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধের প্রয়োজন।”

গবেষকরা গ্রামীণ এলাকাবাসীদের স্থানীয় ফার্মাসিস্টদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিলেও প্যালিনস্কি-ওয়েড একজন অভিজ্ঞ খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করার কথা বলেন।

তার মতে, “একজন নিবন্ধিত পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা সবচেয়ে বেশি উপকারী।”

বর্তমানে ‘টেলিহেল্থ’ সহজলভ্য হওয়ায় দূরে থেকেও বিশেষজ্ঞের স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া সহজ।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন