যে কারণে বাহুমূলে কালচেভাব হয়

চিকিৎসা, ওষুধ কিংবা বংশগত কারণেও বাহুমূলের নিচে কালচেভাব দেখা দেয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2021, 12:03 PM
Updated : 31 August 2021, 12:03 PM

আর যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা হয়ত নানানভাবেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে সমস্যার কারণটা আগে জানতে পারলে সে হিসেবে ব্যবস্থা নিলে সমাধান সম্ভব।

যে কারণে হয়

কালচে বাহুমূলের পেছনে রয়েছে নানান কারণ। সাধারণত চিকিৎসা, ওষুধ এমনকি বংশগতিও প্রভাব রাখে বাহুমূল কালচে হওয়ার পেছনে। এছাড়া ত্বকের রং, ধরন ইত্যাদিও প্রভাব রাখে।

নিউ ইয়র্কয়ের বোর্ড প্রত্যয়িত ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. মারিসা গার্শিক বলেন, “সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারিদের ফুসকুড়ি, র‍্যাশ ও জ্বালাপোড়ার কারণে হাইপারপিগ্মেন্টেইশন দেখা দিতে পারে।”  

হ্যালো গিগিলস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরেক যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. ডেব্রা জালিম্যান বলেন, “যাদের গায়ের রং কিছুটা গাঢ় তাদের বাহুমূল কালো হওয়ার ঝুঁকি বেশি, এর কারণ হল ‘কোষের গাঢ় রং’।”

ডা. গার্শিক বাহুমূল কালচে হওয়ার পেছনে আরও কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ জানান।

১। বংশগত কারণে বাহুমূল কালচে হতে পারে।

২। ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম’ বা ডায়াবেটিসের কারণেও এমনটা দেখা দেয়।

ডা গার্শিক ব্যাখ্যা করেন, “ইন্সুলিন প্রতিরোধ, যা ডায়াবেটিস বা ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম’য়ের ক্ষেত্রে হতে পারে। এর ফলে এক ধরনের কালচেভাব দেখা দিতে পারে যা ‘অ্যাকানথোসিস নাইগ্রিকানস নামে পরিচিত।”

৩। অতিরিক্ত ঘামের কারণেও কালচেভাব দেখা দেয়। ঘামপ্রবণ স্থান বেশি আর্দ্র থাকে ও অস্বস্তি বাড়ায়। ফলে সে সকল স্থানে কালো হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে।

৪। ‘পোস্ট ইনফ্লামাটরি হাইপারপিগ্মেন্টেশন’, ত্বকের যে কোনো জ্বালা পোড়া যেমন- শেইভিংয়ের কারণে হওয়া জ্বলুনি, প্রদাহ, র‍্যাশ ইত্যাদি ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও আক্রান্তস্থানে কালচেভাব রয়ে যেতে পারে।

৫। কিছু অ্যান্টিসেপ্টিক বা প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট ত্বকে একজিমা, অ্যালার্জি বা জ্বলুনি সৃষ্টি করতে পারে। এতে ত্বকে কালচেভাব দেখা দেয়।

বাহুমুলের কালচেভাব দূর করার উপায়

কালচেভাব দূর করতে একসঙ্গে একাধিক উপায় বা পদ্ধতি অবলম্বন না করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন ডা, গার্শিক।

বাহুমূলের ত্বক তুলনামূলক পাতলা ও সংকুচিত অবস্থায় থাকে। তাই যে কোনো উপাদান ব্যবহারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

নায়াসিনামাইড, অ্যাজেলাইক অ্যাসিড, রেটিনল এবং অন্যান্য উপাদান যা কালচেভাব কমাতে সহায়তা করে, এসব ব্যবহার উপকারী বলে জানান, এই ত্বক বিশেষজ্ঞ। 

হঠাৎ করে বাহুমূলে কালচেভাব দেখা দিলে তা তার খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যবহৃত পণ্যগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে জানা যেতে পারে যে, ঠিক কোন উপাদানের জন্য এমনটা দেখা দিচ্ছে।

ডিওডোরেন্ট: যে পণ্যটি ব্যবহার করছেন সেটা কয়েকদিন ব্যবহার না করে দেখতে হবে। যদি কালচেভাব কমতে থাকে তবে বুঝতে হবে ডিওডোরেন্টেই সমস্যা।

হালকাভাবে এক্সফলিয়েট করা: এক্ষেত্রে মৃদু মাত্রা রাসায়নিক ‘গ্লাইকোলিক অ্যাসিড’ বা ‘ল্যাক্টিক অ্যাসিড’ দিয়ে হালকাভাবে মালিশ করা যেতে পারে। তবে এসব স্থান অতিরিক্ত ঘষামাজা না করাই ভালো। অন্যথায় ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।

ত্বক আর্দ্র রাখা: ডা. গার্শিকের মতে, “বাহুমূলের ত্বক আর্দ্র রাখা শুষ্কতা কমায় এবং এতে কালচেভাব ও জ্বলুনি কমে।”

সঠিকভাবে শেইভ করা: বাহুমূল শুষ্ক অবস্থায় শেইভ করা ঠিক নয়। এতে ত্বকে জ্বলুনি বাড়ে ও অস্বস্তি দেখা দেয়। তাই শেইভের আগে তা ভিজিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন ডা. গার্শিক।

ওষুধ: অনেক সময়ে ওষুধের মাধ্যমে এই কালচেভাব দূর করা যায়। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ও নির্দেশিকা অনুসরণ করার পরামর্শ দেন ডা গার্শিক।

আরও পড়ুন