অশালীন স্পর্শ নিয়ে আলোচনায় দেরি নয়

কোন ধরনের স্পর্শ অশালীন শিশুদেরকে তা বোঝাতে হবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2020, 11:17 AM
Updated : 19 March 2020, 11:17 AM

আপনার সন্তান হয়ত স্কুলে অশালীন আচরণের শিকার হচ্ছে। তবে সেই জ্ঞান না থাকায় শিশু বুঝতেই পারছেনা আচরণটা অশালীন। পরে আপনি হয়ত আঁতকে উঠছেন, কপালে চিন্তার রেখা দেখা দিচ্ছে, ভাবছেন এইটুকু বাচ্চার সঙ্গে এমনটা কি আদৌ হতে পারে?

হাল সময়ের ঘটনাবলী সম্পর্কে অবগত থাকলে মনে মনে আপনিও জানেন তা সম্ভব।

অপ্রাপ্তবয়ষ্ক শিশুদের সঙ্গে অশালীন, বিব্রতকর স্পর্শের ব্যাপারে কথা বলার ব্যাপারে বহুদিন ধরেই হুশিয়ারী দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনটা অশালীন সেটা বোঝার কিংবা বিব্রত বোধ করার মতো বয়স আপনার সন্তানের হয়ত এখনই হয়নি। তবে বিকৃত মানসিকতার মানুষগুলো সেই সুযোগটাই লুফে নিচ্ছে।

এমনটি কোনো খারাপ তা বোঝাতে না পারলেও কোন ধরনের আচরণ বা স্পর্শগুলো খারাপ তা তাদের বোঝাতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান’য়ের ‘সিএস মট চিল্ড্রেন’স হসপিটাল একটি জাতীয় জরিপ চালায়, যার বিষয়বস্তু ছিল, বাবা-মা তাদের সন্তানের সঙ্গে অশোভন স্পর্শ নিয়ে আলোচনা করেছেন কি-না।

দেখা যায়, প্রতি চারজন বাবা-মায়ের মধ্যে একজন তা করেননি। মোট ১,১০৬ জন বাবা-মা এই জরিপে অংশ নেয় যাদের প্রত্যেকের কমপক্ষে একটি সন্তান আছে এবং তাদের বয়স দুই থেকে নয় বছরের মধ্যে।

এই জরিপের দায়িত্বে থাকা সারাহ ক্লা্র্ক বলেন, “সন্তানের বয়সোপযোগী উপায়ে একাধিকবার এই আলোচনা করা উচিত বাবা-মায়ের। প্রতিজন পাঁচজন বাবা-মায়ের মধ্যে তিনজন স্বীকার করেন যে তিন থেকে চার বছর বয়সই সন্তানের মধ্যে এই বিষয়ে সাবধানতা শুরু করার আদর্শ বয়স। তবে যাদের সন্তানরা এই বয়স পার করছে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে ৭১ শতাংশ মনে করেন এখনও তাদের সন্তানদের বয়স এই আলোচনার জন্য অনেক কম। অনেক বাবা-মা এমন আলোচনার দিক নির্দেশনা চান। আবার ব্যাপারটি সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ এমন বাবা-মায়ের সংখ্যাও কম নয়।”

ক্লার্ক আরও বলেন, “অশোভনীয় স্পর্শ নিয়ে কীভাবে কথা বলা উচিত সে সম্পর্কে ধারণা না থাকলে আলোচনার শুরুতেই ভাষা হারিয়ে ফেলবেন অনেক বাবা-মা। চার থেকে ছয় বছর বয়সি সন্তানদের বাবা-মা, যারা এখনও এব্যাপারে সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করেননি, তাদের ৩৯ শতাংশই বলেন- কীভাবে কথা বলতে হবে তা বুঝে উঠতে না পারাই তাদের বিলম্বের কারণ। এরমধ্যে ১৮ শতাংশ মনে করেন এই আলোচনা কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ শিশুদের সঙ্গে অশালীন স্পর্শের ঘটনা বিরল।”

শিশুদের সঙ্গে যৌন নিপীড়নের বাস্তবতাকে বাবা-মায়ের অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। পরিসংখ্যান বলে প্রতি চারজন মেয়ে শিশুর মধ্যে একজন এবং প্রতি ছয়জন ছেলে শিশুর মধ্যে একজন যৌন নিপীড়নের শিকার হয় ১৮ বছর বয়সের আগেই, জানান ক্লার্ক।

তাই অশালীন আচরণ নিয়ে আলোচনার শুরুটা হতে পারে শরীরের বিভিন্ন অংশের সঠিক নাম সন্তানদের শেখানোর মাধ্যমে। পাশাপাশি শরীরের কোন অংশগুলো একান্ত ব্যক্তিগত বা গোপনীয় সে ব্যাপারেও তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া শুরু করতে হবে।

গবেষকরা আরও জানতে পারেন, প্রায় ৬০ শতাংশ বাবা-মা চান স্কুলেই এই বিষয়গুলো শিশুদের শেখানো উচিত। আবার ৭৬ শতাংশ বাবা-মা মনে করেন, স্কুলের উচিত বাবা-মাকে এই বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও দিক নির্দেশনা দেওয়া।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন