ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনার বিষয়টা আমাদের দেশে আজও বিব্রতকর। তা আরও বিব্রতকর হয় যখন সন্তান প্রশ্ন করে স্যানিটারি প্যাড কী? তা কী কাজে ব্যবহার হয়? আপনি হয়ত ভাবছেন এখনই এই বিষয়ে আলোচনা করার সঠিক সময় হয়নি, কিন্তু তারা অন্য কোনো মাধ্যমে সে সম্পর্কে কৌতুহলী হয়ে উঠেছে।
পরিস্থিতি আর সময় যেমনই হোক, সন্তান এবিষয়ে প্রশ্ন করে বসলে তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত হবে না। এড়িয়ে গেলেও সন্তান তার কৌতুহল মেটাতে গিয়ে ভুল তথ্যের সংস্পর্শে আসতে পারে। যার ফলাফল হতে পারে আরও বিব্রতকর।
সংবেদনশীল এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কয়েকটি পন্থা স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল।
সঠিক সময়: ঋতুস্রাব বা মাসিক নিয়ে আলোচনার কোনো বাঁধাধরা সময় বা নিয়ম নেই। সন্তানের বিষয়টি বোঝার মতো বয়স হলেই আলোচনা করা যেতে পারে।
প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনার ক্ষেত্রে এই চক্রের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ জরুরি নয়, যেমন পাঁচ বছর বয়সের সন্তানের ক্ষেত্রে। চিকিৎসকদের মতে, ১২ বছর বয়সেই মেয়েদের ঋতু পরিবর্তনের চক্র শুরু হতে পারে, তবে ঋতুস্রাব বা মাসিক শুরু হতে পারে তারও আগে। তাই মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ বছর বয়সের মধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে এই আলোচনা করার আদর্শ সময় হবে ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সে। সন্তানের মানসিক বিকাশ বিবেচনা করে সঠিক সময়টা অভিভাবককেই বেছে নিতে হবে।
যেভাবে বোঝাবেন: আজগুবি গালগল্প বাদ দিয়ে বাস্তবধর্মী জৈবিক শব্দ ব্যবহার করেই এই বিষয়ে বোঝানো উচিত। তবে তা কেনো হয়, কীভাবে হয় সেবিষয়ে বেশি গভীর আলোচনা এই বয়সেই প্রয়োজনীয় নয়। প্রধান উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত ঋতুস্রাব নিয়ে প্রচলিত যেসব কুসংস্কার এবং ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত আছে সেগুলো থেকে প্রকৃত বিষয়টা আলাদা করে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যটা দেওয়া, তাকে বোঝানো যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, কোনো রহস্য ঘেরা ঘটনা নয়।
আর ছেলে-মেয়ে দুজনকেই বোঝাতে হবে ঋতুস্রাব চলাকালীন বিষয়টিকে কেন্দ্র অপরকে হেয় করা কিংবা লজ্জিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আর ছেলেদের বোঝান এসময় মেয়েদের বিব্রতকর প্রশ্নে জর্জরিত করে তাদের অপমান করা অত্যন্ত খারাপ কাজ।
নিজের প্রস্তুতি: সন্তানের সঙ্গে ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনা করা আগে নিজেকে কথাগুলো গুছিয়ে নিতে হবে। কতটুকু বলবেন, কীভাবে বলবেন, সন্তানের কাছ কী ধরনের পাল্টা প্রশ্ন আসতে পারে, সেগুলোর কী জবাব দেবেন ইত্যাদি।
ইন্টারনেটে খুঁজলে এমন অনেক ‘টিউটোরিয়াল’ পাবেন, পড়তে পারেন বইপত্রও। সন্তানের স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে এবিষয়ে সাহায্য চাইতে পারেন। আলোচনার আগে পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়াই হবে মূল লক্ষ্য।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন