প্রসাধনী থেকে র‌্যাশ হওয়ার কারণ

প্রসাধনীতে থাকে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান যা ত্বকে সৃষ্টি করতে পারে অ্যালার্জি। 

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2020, 06:58 AM
Updated : 12 Jan 2020, 06:58 AM

নতুন এক গবেষণার আলোকে গবেষকরা বলছেন, “এই রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বকে থাকা চর্বিজাতীয় জৈবিক ‘লিপিড’কে যে পদ্ধতিতে স্থানান্তরিত করে সেই পদ্ধতি-ই হতে পারে অ্যালার্জি দেখা দেওয়ার কারণ।”

‘সায়েন্স ইমিউনোলজি’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, “ত্বকে এই অ্যালার্জির আক্রমণকে বলা হয় অ্যালার্জিজনীত ‘ডার্মাটাইটিস’। নতুন আবিষ্কার থেকে জেগেছে নতুন এক সম্ভাবনা। আর তা হল, বিপরীতধর্মী ‘লিপিড’ ত্বকে প্রয়োগের মাধ্যমে যে রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করছে সেগুলোকে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।”

বর্তমানে অ্যালার্জিজনীত ‘ডার্মাটাইটিস’ সারানোর একমাত্র উপায় হল, কোন রাসায়নিক উপাদান অ্যালার্জি সৃষ্টি করছে তা সনাক্ত করা এবং তার সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা। অ্যালার্জির কারণে ত্বকে যে র‌্যাশ হয় তার যন্ত্রণা কমানো যায় ‘অয়েন্টমেন্ট’য়ের সাহায্যে, আর পুরোপুরি সারতে সময় লাগে এক মাসেরও কম।

র‌্যাশ তীব্র হলে চিকিৎসকরা গিলে খাওয়ার ‘কর্টিকোস্টেরয়েড’, সংক্রমণনাশক ওষুধ দেন। তবে এই ওষুধগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দমিয়ে রাখে, ফলে অন্য সংক্রমণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

অ্যালার্জি শুরু হয় তখনই যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘টি সেল’ কোনো উপাদানকে বিপজ্জনক মনে করে। ‘টি সেল’ ছোট রাসায়নিক উপাদান সরাসরি সনাক্ত করতে পারে না, তাই ‘টি সেল’ দ্বারা সনাক্ত হওয়ার জন্য প্রোটিনের সঙ্গে ওই রাসায়নিক উপাদানগুলোর বিক্রিয়া ঘটাতে হয়।

গবেষণায় সহকারী প্রধান, নিউ ইয়র্কের ‘কলোম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ভ্যাগেলোস কলেজ অফ ফিজিসিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস’য়ের ‘ডার্মাটোলজি’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনামিক দে জং বলেন, “প্রসাধনী সামগ্রীতে অ্যালার্জিজনীত ‘ডার্মাটাইটিস’ সৃষ্টিকারী এমন অনেক রাসায়নিক উপাদান থাকে যাদের বৈজ্ঞানিকভাবে অ্যালার্জি সৃষ্টি করার কথা নয়। ক্ষুদ্র ওই রাসায়নিক উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘টি সেল’য়ের কাছে অদৃশ্য হওয়া উচিত, কিন্তু আসলে হয় না।”

দে জং ও তার গবেষক দলের সন্দেহ হল, ‘সিডিওয়ানএ মলিকিউল’ যা ত্বকের বাহ্যিক অংশের রোগ প্রতিরোধকারী কোষ ‘ল্যাঙ্গারহানস সেলস’য়ের কাছে ধরা পড়ে না, সেটাই ‘টি সেল’য়ের কাছে এই রাসায়নিক উপাদানগুলোকে দৃশ্যমান করে তোলে।

দে জং’য়ের গবেষণাটি করেন ‘টিস্যু কালচার’ করে রাখা মানুষের কোষের ওপর। সেখানে দেখা যায়, অ্যালার্জিজনীত ‘ডার্মাটাইটিস’ সৃষ্টিকারী একাধিক রাসায়নিক উপদান ‘ল্যাঙ্গারহানস সেল’য়ের সমতলে ‘সিডিওয়ানএ’য়ের সঙ্গে রাসায়নিকভাবে যুক্ত হতে পারে এবং সক্রিয় করে তুলতে পারে ‘টি সেল’কে। এমন রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে আছে ‘বালসাম অফ পেরু’ ও ‘ফার্নেসল’, যা অসংখ্য প্রসাধনী, সুগন্ধি, টুথপেস্ট’য়ে ব্যবহার হয়।

‘বালসাম অফ পেরু’তে গবেষকরা সনাক্ত করেছেন ‘বেনজিল বেনজোয়েট’ ও ‘বেনজিল সিনামেট’, যা অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এছাড়াও আরও কয়েকটি ক্ষুদ্র রাসায়নিক উপাদানও তারা পেয়েছেন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘টি সেল’কে সক্রিয় করে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন