কানে হেডফোন গুঁজে ঘুমানোর কুফল

মন শান্ত করতে সংগীত কার্যকর হলেও কানে হেডফোন গুঁজে ঘুমানোটা মোটেই স্বাস্থ্যকর বিষয় নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2018, 11:42 AM
Updated : 3 Dec 2018, 11:43 AM

প্রশান্তির সংগীত বা পছন্দের গান শুনতে শুনতে আরামের ঘুম আসে। সেই গান শোনার জন্য যদি হেডফোন বা ‘ইয়ারবাডস’ কানে রেখে ঘুমিয়া পড়া হয় তবে ঘটতে পারে নানান ঝামেলা।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে কানে হেডফোন গুঁজে ঘুমানোর কুফল সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানায়, আমাদের শরীর নিজস্ব একটি ‘সার্কাডিয়ান’ চক্র মেনে চলে। এই চক্রের মাঝে বাহ্যিক শব্দ যোগ করার মাধ্যমে আমরা শরীরকে নতুন কিছুর উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করছি।

তাই দীর্ঘমেয়াদের ঘুমের জন্য সংগীতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া ক্ষতিকর হতে পারে। আবার এই সংগীতের কারণে ঘুমের মানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘুমের মান নষ্ট হওয়ার একটি বড় কারণ হল আমরা মোবাইল ফোন সারাক্ষণ ব্যবহার করতে থাকি, গান শোনা কিংবা অন্য যে কোনো কাজে। ফলে এই যন্ত্র সবসময় আমাদের হাতে থাকে, এমনকি বিশ্রামের সময়ও। ফলে আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় সচল থাকে, পায় না পর্যাপ্ত বিশ্রাম।

গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লে মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না। মস্তিষ্কের যে অংশটুকু সাড়া দেওয়া ও শব্দ গ্রহণ করার জন্য কাজ করে তা অচেতন হয় তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়না। ফলে রাতে ঘুম ভেঙে যায় কিংবা ঘুমের মধ্যে নিজেও হয়ত গুনগুন করে গান গাইতে থাকেন।

একটানা ৮ ঘণ্টা নির্ভেজাল ঘুমের পরিবর্তে এক বা একাধিকবার ঘুম ভেঙে যাওয়া হৃদস্পন্দনের গতি বাড়ায় যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

আরেকটি সম্ভাব্য সমস্যা হল- পরদিন সকালে অনবরত কানে ভোঁ ভোঁ বাজতে পারে; যা স্বাভাবিক হতে দীর্ঘসময় নেয়। সমস্যাটা তেমন গুরুতর মনে না হলেও আসলে এটা হল কানে হেডফোন গুঁজে ঘুমানোর কারণে কানের পর্দায় ব্যথা হওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। 

বেশি আওয়াজে গান শোনাও কানের জন্য ক্ষতিকর। এই ক্ষতির মাত্রা হয়ত নগন্য, তবে অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

আবার হেডফোনের ইয়ারবাড কানে ঠিকমতো নাও বসতে পারে, যার ফলাফল হতে পারে কানের আশপাশের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা। সেই সঙ্গে কানের ভেতরে ময়লা বাড়তে পারে, যা একাধারে অস্বাস্থ্যকর এবং শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

তাই বলে গান শোনা কী বন্ধ থাকবে?

রাতে নির্ভেজাল ঘুম সবসময়ই প্রথম পছন্দ হওয়া চাই। ঘুমানোর আগে গান যদি শুনতেই হয় তবে ফোন হাতের নাগালের বাইরে রেখে মিষ্টি সুরে শুনতে হবে। মিউজিক অ্যাপে টাইমার দেওয়া যেতে পারে, যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময় পর গান বন্ধ হয়ে যাবে।

মনে রাখতে হবে মিষ্টি সুরের শান্ত সংগীত আপনাকে হয়ত ঘুমাতে সহায়তা করবে, তবে ঘুম গভীর হওয়ার পথে সেটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ছবি: রয়টার্স