স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এসব উপাদান থেকে বাসা নিরাপদ রাখার উপায় উল্লেখ করা হয়।
গৃহস্থালী রাসায়নিক বর্জন: ঘরের ভেতরে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ রাসায়নিক দ্রব্য আপনার হাঁপানির অবস্থার অবনতির জন্য দায়ী হতে পারে। যেমন:
এয়ার ফ্রেশনার। পরিষ্কারক দ্রব্য। কসমেটিক্স। গ্লু বা আঠা। পেইন্ট। কীটনাশক সামগ্রী – ইত্যাদি।
ঘরের ভেতর ব্যবহৃত এসব রাসায়নিক সামগ্রীর কারণে যদি আপনার হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যায় তবে এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ভালো বিকল্প হতে পারে ভেষজ উদ্ভিদ থেকে তৈরি প্রাকৃতিক পণ্য। পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বেইকিং সোডা কিংবা ভিনিগার। ঘরদোর পরিষ্কার ও পেইন্টিংয়ের সময় বাসার বাইরে থাকুন।
ছত্রাক প্রতিরোধ: স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্মানো ছত্রাকের কারণে হাঁপানি হতে পারে। বাথরুম, বেইজমেন্ট ও চুইয়ে পড়া পানির স্থানে ছত্রাক জন্মাতে পারে। ছত্রাক প্রতিরোধে করণীয়:
- ঘরের কোথাও চুইয়ে পড়া পানির প্রবাহ দেখলে দ্রুত মেরামত করুন, এবং স্থানটি ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
- বাথরুম ও রান্নাঘরে এক্সজস্ট ফ্যান লাগিয়ে দিন। সেটা সম্ভব না হলে, গোসল, রান্না বা থালাবাসন ধোয়ার সময় অন্তত একটি জানালা খুলে দিন।
- পানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে জমে থাকা ছত্রাক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, তারপর ভালো মতো শুকিয়ে নিন।
- ছত্রাক পরিষ্কার করার সময় হাতে রাবারের গ্লাভস ও নাকে মাস্ক লাগিয়ে নিন।
ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণ: হাঁপানির সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ ধুলাবালি ও ধুলাবালিতে মিশে থাকা ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ। ঘরের ভেতরে ধূলাবালির হাত থেকে বাঁচতে করণীয়:
- মেঝে থেকে কার্পেট সরিয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে কার্পেটের বদলে টাইলস লাগান।
- বায়ুরোধী প্লাস্টিকের কাভার দিয়ে ম্যাট্রেস, বালিশ ইত্যাদি ঢেকে রাখুন।
- ১৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিতে বিছানার চাদর ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে একবার। ড্রায়ারে শুকিয়ে নিন।
- আসবাব, দরজা ইত্যাদির উপরিতল ভেজা কাপড় দিয়ে নিয়মিত মুছুন।
পোষা প্রাণীর সংস্পর্শ নিয়ন্ত্রণ: গৃহপালিত রোমশ প্রানীর সংস্পর্শে থাকলে হাঁপানি তীব্রতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তাদের সংস্পর্শ ও চলাচল সীমিত করা উচিত।
- শোবার ঘরে ঢুকতে দেবেন না, সম্ভব হলে ঘরের কার্পেটমুক্ত অংশেই তাদের চলাচল সীমিত করুন।
- খাঁচায় পোষা প্রাণী থাকলে খাঁচাটি অন্য কাউকে দিয়ে পরিষ্কার করান।
- পোষা প্রাণী বাড়ির বাইরে রাখাই ভালো।
- পোষা প্রাণীর চর্মরোগ, যেমন- চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি এলার্জির কারণ হতে পারে। এগুলো থেকে নিরাপদ থাকতে নিয়মিত পশু ডাক্তার দেখানো ও পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ দূর করুন
- আসবাবপত্র যেমন- ড্রয়ার, কেবিনেট, আলমারি ইত্যাদির ভেতর ও তলা নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
- দেয়ালের ফাটল, ভাঙা জানালা ইত্যাদির মাধ্যমে ঘরে পোকামাকড় প্রবেশ করতে পারে, তাই এগুলো সময়মত মেরামত করুন।
- পোষা প্রাণীর খাবারের পাত্রেও পোকা বাসা বাঁধতে পারে, তাই খাওয়া শেষ হওয়া মাত্রই পাত্র সরিয়ে ফেলুন।
- বায়ুরোধী পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করুন। ব্যবহৃত খাবার, উচ্ছিষ্ট ইত্যাদি পরিষ্কার করুন।
- ঢাকনাযুক্ত ময়লা রাখার পাত্র ব্যবহার করুন এবং লক্ষ রাখুন যেন, ময়লা জমে উঠতে না পারে।
ঘরের ভেতর দূষণ রোধ
- ঘরের ভেতরে ধুমপান করবেন না, অন্য কাউকে করতে দেবেন না।
- গ্যাসের চুলায় রান্না করার সময় এক্সজস্ট ফ্যান চালু করে নিন।