ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পন্থা

ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2023, 12:51 PM
Updated : 28 Feb 2023, 12:51 PM

সব ময়েশ্চারাইজার সব ধরনের ত্বকের জন্য নয়।

ত্বক পরিচর্যার রুটিনে ক্লেঞ্জার, সানস্ক্রিন ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার আবশ্যক।

সেরাম, রেটিলন ও অন্যান্য প্রসাধনী ত্বকের নানান সমস্যা দূর করতে পারে।  

রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক’য়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. মারিশা গার্শিক বলেন, “ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে সুরক্ষার স্তর দৃঢ় করে। ত্বকে মসৃণ ও কোমলভাব ফুটিয়ে তোলে।”

তার মতে, ময়েশ্চাইজারে থাকা উপাদান যেমন- হিউমেকটেন্ট আর্দ্রতা ধরে রাখে, ইমুলিয়েন্ট ত্বক কোমল ও মসৃণ রাখে। আর অকুলসিভ ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখে।

নিউ ইয়র্কয়ের আরেক ত্বক বিশেষজ্ঞ লিয়েন ম্যাক বলেন, “ত্বকের ওপরে সুরক্ষার স্তর বা বাইরের অংশ পরিবেশের দূষণ ও চাপ থেকে ভেতরের স্তরকে ভালো রাখে।”

তিনি আরও বলেন, “ময়েশ্চারাইজার ত্বকের প্রদাহজনক অবস্থার ঝুঁকি কমায়, ত্বকের মৌলিক গঠন উন্নত করতে ও কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।” 

ময়েশ্চারাইজার নির্বাচনের উপায়

ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করা উচিত। মানানসই প্রসাধনী ব্যবহারের অভাবে ত্বকে ব্রেক আউট, জ্বলুনি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

ব্রণ ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য

“ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ প্রবণ হলে এতে নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে লোমকূপ আবদ্ধ হয়ে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে,” বলেন ডা. ম্যাক।

শুষ্ক ত্বক

শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন।

ডা গার্শিকের মতে, “ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট বা ভারী লোশন ব্যবহার করা ভালো।”

শিয়া বাটার, জোজোবা তেল, গ্লিসারিন ও হায়ালুরনিক অ্যাসিড ইত্যাদি শুষ্ক ত্বকের জন্য উপকারী।

সংবেদশীল ত্বক

সংবেদনশীল ত্বকের জন্য মৃদু, ঘ্রাণমুক্ত এবং ত্বকের সুরক্ষক হিসেবে কাজ করে এমন উপাদান যেমন- সেরামাইড ও পেপটাইডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার উপকারী।

যুক্তরাষ্ট্রের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ জিনেট গ্রাফ বলেন, “গরম কালের তুলনায় শীত ও শুষ্ক মাসগুলোতে ত্বকে বেশি আর্দ্রতার প্রয়োজন।”

অন্যদিকে গরম ও আর্দ্র সময়ে হালকা পণ্যের প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, “ত্বক পরিচর্যা আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। তাই ত্বক উপযোগী পছন্দসই পণ্য ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।”

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম

ধাপ ১: মুখ ভালো মতো ধুয়ে নেওয়া

ময়েশ্চাইজার ব্যবহারের আগে ভালো মতো মুখ ধুয়ে নিতে হবে। মৃদু, কোমল ক্লেঞ্জার ত্বক থেকে ঘাম, ময়লা, তেল, মেইকআপ এবং ব্যবহৃত প্রসাধনী পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।

ডা. গার্শিক ব্যাখ্যা করেন, “ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে ত্বক ভালো মতো পরিষ্কার করে নিতে হয়। ময়লা মুখে প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। ব্যাক্টেরিয়া, মেইকআপ ও অন্যান্য প্রসাধনী মুক্ত ত্বকে ময়েশচারাইজার ব্যবহার করা উচিত।”

ধাপ ২: পাতলা থেকে ঘন মাত্রার প্রসাধনী ব্যবহার

ত্বকের যত্নে টোনার, সেরাম, এসেন্স এবং অন্যান্য ট্রিটমেন্ট পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাতলা থেকে ভারী ঘনত্বের পণ্য ব্যবহার করতে হবে। ত্বক আর্দ্র অবস্থায় প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।

সানস্ক্রিন ও মেইকআপ ছাড়া অন্য যে কোনো ‘ওয়াশ অফ’ ব্যবহারের পরে ধুয়ে ফেলতে হয়, যেমন ফেইস মাস্ক বা পিল। এমন পণ্য ব্যবহারের পরে ময়েশচারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

ধাপ ৩: ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

ত্বক পরিচর্যার পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সিকি পরিমাণ ময়েশ্চারাইজার নিয়ে মুখের সর্বত্র, গলা, কান, কপাল ও চুলের রেখার অংশেও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

আর্দ্র ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। এতে আর্দ্রতা বজায় থাকে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে ত্বক সামান্য পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হবে।

খুব বেশি জোরে ঘষা বা চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

ত্বকে টানটানভাব রাখতে ওপরের দিকে আলতো চাপ দিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

ডা. ম্যাক বলেন, “ক্রিম ময়েশ্চারাইজার ত্বকে আলতো চাপ দিয়ে ব্যবহার করতে হয়।”

জেল বা পানি ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ত্বকে শোষণ হওয়ার আগ পর্যন্ত গোলাকারভাবে মাখতে হবে।

ডা. ম্যাক বলেন, “ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে ত্বক আর্দ্র হবে, চিটচিটে নয়।”

অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হলে তা পরিষ্কার, আর্দ্র ও পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।

ধাপ ৪: সানস্ক্রিন ও মেইকআপ ব্যবহার

সকালে ত্বক পরিচর্যার ধাপ সম্পন্ন করার পরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এরপরে চাইলে মেইকআপ করা যায়। তবে রাতে মেইকআপ করতে চাইলে সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন

Also Read: যে কারণে প্রসাধনীর কার্যকারিতা হারায়

Also Read: প্রসাধনীর ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান সম্পর্কে ধারণা

Also Read: ত্বক পরিচর্যার প্রসাধনী যে পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত