উলুরু একটি পর্বত, বয়স তার ৫৫০ মিলিয়ন বছর।
Published : 14 Feb 2024, 10:03 AM
উলুরু একটি পর্বত, এক খণ্ড পাথরে তৈরি একটি বুড়ো পর্বত। বয়স তার ৫৫০ মিলিয়ন বছর। অদ্ভুত না? অস্ট্রেলিয়ার বিস্ময়! শুধু তা-ই নয়, এটি পৃথিবীতেও বিরল! যুগ যুগ ধরে তৈরি হয়েছে বেলেপাথরে।
উলুরুকে অস্ট্রেলিয়ার মানুষ তাদের সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করে। এর একটি পুরনো নামও আছে ‘আয়ার্স রক’। সবচেয়ে মজার যে বৈশিষ্ট্য, তা হলো, উলুরু গিরগিটির মতো রং বদলায়। দিনের একেক সময় একেক রঙে দেখা যায় তাকে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় লাল টকটকে। আকাশ মেঘলা হলে গাঢ় নীল, কখনো বা বেগুনি। দুপুরের গনগনে রোদে কমলা রঙে জ্বলজ্বল করে।
ওখানকার আদিবাসীদের কাছে ‘উলুরু’ একটি পবিত্র স্থান। প্রায় ৩০ হাজার বছর ধরে তারা এখানে বসবাস করে আসছে। উলুরুকে ঘিরে প্রচলিত আছে নানা উপকথা। এরকম তিনটি উপকথা নিয়ে অনীলা পারভিনের বই ‘উলুরু’।
একুশে বইমেলায় এটি প্রকাশ করেছে ইকরিমিকরি প্রকাশনী, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ করেছেন হৃদিতা আনিশা। বইয়ের তিনটি গল্প হলো- ‘ল্যাংকাটা’, ‘কুনিয়া ও লিরু’ এবং ‘মালা’।
ল্যাংকাটা একটা নীল জিহ্বার গিরগিটি। পথ চলতে চলতে একবার সে উলুরুর কাছে চলে এলো। উলুরু দেখে তো সে অবাক! এত বিশাল আর সুন্দর পাথরখণ্ড সে জীবনেও দেখেনি। উলুরু ছেড়ে যেতে তার মন চাইল না। সে ঠিক করল কয়েকটা দিন এখানে থাকবে।
উলুরুর ভেতর একটা জলাশয় আছে। হাঁটতে হাঁটতে সে ওখানে চলে এলো। ল্যাংকাটার খুব ক্ষুধা পেয়েছে। হঠাৎ তার চোখে পড়ল একটি আহত ইমু জলাশয়ের ধারে পড়ে আছে। এখন ল্যাংকাটা কী করবে? এমন রহস্যের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে গল্পটি।
এদিকে এক বিশাল অজগরের নাম কুনিয়া। যখন ডিম পাড়ার সময় হলো তখন সে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ল। তার কেবলই মনে হচ্ছিল উলুরুর কাছে গেলেই বুঝি সে সুস্থ হয়ে যাবে। পথ চলতে শুরু করল সে। বহুদূর পথ পাড়ি দিয়ে কুনিয়া একদিন উলুরুতে এসে পৌছল। কী যে শান্তি! আহা! কী সুন্দর আর পবিত্র!
উলুরুর গা ঘেঁষে একটি নিরাপদ জায়গা দেখে সে ডিম পাড়ল এবং ডিমগুলোকে লাল বালু দিয়ে ঢেকে রাখল। হঠাৎ একদিন কুনিয়া দেখতে পেল তার ভাইয়ের ছেলে মিনিমা দৌড়াতে দৌড়াতে এদিকেই আসছে। হাঁপাতে হাঁপাতে সে এসে পৌঁছল। বলল, আমাকে বাঁচাও। লিরু নামের বিষাক্ত সাপের দল আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এমনি টানটান উত্তেজনার গল্প ‘কুনিয়া ও লিরু’।
শেষ গল্প ‘মালা’ হল অস্ট্রেলিয়ায় বহুকাল আগে বসবাস করা একটি জাতির নাম। জীবিকার জন্য তারা ঘুরে বেড়াত এখানে-সেখানে। ঘুরতে ঘুরতে একবার তারা চলে এলো উলুরুর কাছে। দেখে তো ওদের বিস্ময়ের শেষ নেই। ওরা ঠিক করল বাড়ি বানিয়ে এখানেই থাকবে। আশপাশে যা পেল তা দিয়েই তারা বসবাস করার মতো একটা বাড়ি বানিয়ে ফেলল। গৃহপ্রবেশ উপলক্ষ্যে একটা উৎসবের আয়োজন করল তারা। তারপরের কাহিনি জানতে পড়তে হবে অনীলা পারভীনের বই ‘উলুরু’।
অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অনীলা পারভীন শিশুদের জন্য লেখালেখি করতে ভালোবাসেন। ‘অস্ট্রেলিয়ার উপকথা’ ও ‘অস্ট্রেলিয়ার আরো উপকথা’ নামে তার আরও দুটি শিশুতোষ বই রয়েছে। বইমেলায় ‘উলুরু’ পাওয়া যাবে শিশু চত্বরে ইকরিমিকরি প্রকাশনীর ৬৭১-৬৭২ নাম্বার স্টলে। পুরো চার রঙা ১৬ পৃষ্ঠার এ বইটির মুদ্রিত মূল্য ২৭৫ টাকা।