বিশ্বজুড়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে এই ইনজেকশনের ব্যবহার বাড়ায় এর চাহিদাও অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে।
Published : 15 Nov 2023, 05:52 PM
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ওজেম্পিক রপ্তানি নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছেন জার্মানির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএফএআরএম-র প্রধান।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকরা সপ্তাহে একবার ওজেম্পিক ইনজেকশন গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই ইনজেকশনে থাকা উপাদান অগ্ন্যাশয়কে আরও ইনসুলিন তৈরি করতে সাহায্য করে। যাতে শর্করার মাত্রাও কম থাকে।
ওজেম্পিকে থাকা উপাদানগুলো ওজন কমাতেও সাহায্য করে। যে কারণে, অনুমদিত না হলেও ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে ওজেম্পিকের ব্যবহার দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কারণে বিশ্বজুড়ে এই ইনজেকশনের চাহিদ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
গ্লোবাল হেল্থকেয়ার কোম্পানি নভো নরডিক্স ওজেম্পিক তৈরি করে। একই কোম্পানি অ্যান্টি-ওবেসিটি ওষুধ ওয়েগোভি তৈরি করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওয়েগোভি দারুণ জনপ্রিয় হলেও ইনজেকশনটি সহজলভ্য নয়। ওয়েগোভি ও অপেক্ষাকৃত সহজলভ্য ওজেম্পিক এ থাকা কিছু উপাদান একই হওয়ায় তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে ডায়াবেটিসের এই ওষুধটির ব্যবহার বেড়েছে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে ওজেম্পিকের ব্যবহার নিরাপদ কিনা তা নিয়ে এখনো যথেষ্ট গবেষণা হয়নি। বরং এটির নিয়মিত ব্যবহারে শরীর তার স্বাভাবিক নিয়মে ইনসুলিন উৎপাদন করা বন্ধ করে দিতে পারে। যেহেতু বাইরে থেকে ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করছে তাই শরীর এই ‘নতুন স্বাভাবিক’ অবস্থায় মানিয়ে নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিএফএআরএম-র প্রধান কার্ল ব্রোইচ জার্মান ম্যাগাজিন স্পিজেলকে বলেন, “বর্তমানে (ওষুধ নিয়ন্ত্রণে) যেসব ব্যবস্থা চালু আছে এবং জনগণকে সতর্ক করতে যেসব বার্তা দেওয়া হয়েছে সেগুলো যদি কাজ না করে তবে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে আমরা এখন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।
“তারপরে আমরা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে চিন্তা করব, যাতে রোগীদের প্রয়োজনের জন্য দেশে যথেষ্ট পরিমাণে ওষুধ মজুদ থাকে।”
জার্মানি থেকে ওজেম্পিক ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বলেন, “অন্যান্য অনেক দেশে থেকে জার্মানিতে ওজেম্পিক তুলনা মূলক সস্তা বলেও আমাদের দেশ থেকে ওষুধটি বাইরে চলে যাচ্ছে। ওজন কমাতে ওজেম্পিকের ব্যবহারের কারণে এর চাহিদা বেড়ে গেছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নে এক বাজারের কারণে আইনী বাধা থাকায় সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জন্য রাপ্তানির উপর এককভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘটনা খুব বিরল বলেও মনে করিয়ে দেন এই কর্মকর্তা।