“এই ভাইরাসের চিকিৎসায় ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। তবে এখন সাধারণ সর্দিজাতীয় রোগের জন্য যে গাইডলাইন আছে তার সঙ্গে খুব পার্থক্য থাকবে না।”
Published : 13 Jan 2025, 04:51 PM
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) কোভিডের মতো মারাত্মক না। এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো সতর্কতা জারি করেনি।
তাই এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এইচএমপিভি কোভিডের মতো না।
“এইচএমপি ভাইরাস বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই আছে। এ ভাইরাস সাধারণ ফ্লুর মতোই। এটি কোনো ভয়ানক ভাইরাস নয়। এই ভাইরাস কোভিডের মতো না, এজন্য কোভিডের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজন নেই। তবে মাস্ক পরা এবং শিশু ও বয়স্কদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো।”
অধ্যাপক সায়েদুর বলেন, “এই ভাইরাসটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা নেই। তাই সীমান্তে সতর্কতারও কিছু নেই।”
“এই ভাইরাসের চিকিৎসায় ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। তবে এখন সাধারণ সর্দিজাতীয় রোগের জন্য যে গাইডলাইন আছে তার সঙ্গে খুব পার্থক্য থাকবে না,” বলেন অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
চীন ও ভারতের পর রোববার বাংলাদেশে এক রোগীর শরীরে এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত করার তথ্য দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।
এবারের শীতে চীনের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশুরা এ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা জারি করেছে চীন।
চীনের পর ভারতের কর্ণাটক রাজ্যেও আট মাসের এক শিশুর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত বেশকিছু রোগী পাওয়া গেছে ভারতে।
বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছে ভারত সরকার।
এইচএমপি ভাইরাসে সাধারণত শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, র্যাশ ওঠার মত লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গ মৃদু।
তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার মত মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ভারতে এ ভাইরাসে প্রথম আট মাসের এক শিশুর আক্রান্তের খবরে বাংলাদেশে ঝুঁকির প্রবণতা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেনের কাছে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশেও এই ভাইরাসটি ছিল, আছে। ফলে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্ত হলে লক্ষণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মত।
“এই রোগ বাংলাদেশে ছিল। পৃথিবীর সব দেশেই আছে, এটা নতুন না। সতর্ক থাকা উচিত, কিন্তু শুধু শুধু আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নাই। চীনের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অনেক রোগী আসছে, তাই তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এটা তাদের দেশের নিয়ম।”
এইচএমপি ভাইরাস ‘প্রাণঘাতী নয়’ জানিয়ে ডা. মুশতাক বলেন, যারা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
“কারও যদি আগে থেকে কোমর্বিডিটি থাকে, তাহলে যে কোনো রোগই তার জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। এই ভাইরাসে বাচ্চা ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ইনফ্লুয়েঞ্জার যেমন ঝুঁকি, এই রোগেরও তেমন ঝুঁকি।”
ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, জ্বর ও সর্দিকাশি আছে এমন ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা, জটিল রোগী হলে সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ।