সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে ছায়ানটে লোকসংগীতের আসর

আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় রাধারমণ দত্তকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 04:10 AM
Updated : 3 Dec 2022, 04:10 AM

সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে লোকসংগীতের আসর। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই আয়োজনে একক ও সম্মেলক কণ্ঠে গান পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিক্ষার্থীরা। আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় রাধারমণ দত্তকে।

‘আমি রবনা রবনা গৃহে’ রাধারমণ দত্তের এই গানটি সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ছায়ানটের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মফিদুল হক।

তিনি বলেন, “লোকসংগীতের মধ্যে যে মানবতার সুর ধ্বণিত হয়েছে। বিশেষ করে ধর্মের বিভাজন অতিক্রম করে মানুষ তার স্ব স্ব ধর্মস্থানে থেকেও অন্তরে শুভ-সুন্দর-কল্যাণের জন্য যে আকুতি। সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার এবং জীবনের সঙ্গে মহাজীবনের যে বন্ধন, তা অনুভব করতে চাই।

“মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে সম্প্রীতির সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমরা যে বাংলাদেশকে গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধের সেই স্মৃতিকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাব। আমাদের লোকসঙ্গীতের গুণি শিল্পীরা সেই পথে প্রেরণা জোগাবে।”

বাংলা লোকসংগীতের বিশাল ভাণ্ডার, যাদের দ্বারা সমৃদ্ধ হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৫ জনের গান নিয়ে এই আয়োজনটি সাজানো হয়েছে বলেও জানান মফিদুল হক।

বক্তব্যে রাধারমণ দত্ত, জালাল উদ্দিন খাঁ, বিজয় সরকার, শাহ আবদুল করিম, কুটি মনসুরের জীবন ও কর্ম নিয়েও সংক্ষিপ্তভাবে আলোকপাত করেন তিনি। এরপর একক কণ্ঠে শাহানাজ আক্তার শোনান রাধারমণ দত্তের ‘আমার বন্ধু দয়াময়’ এবং চন্দনা মজুমদার শোনান ‘জলে যাইয়ো না গো রাই’।

সম্মেলক কণ্ঠে ‘কূল নাই দড়িয়ার পাড়ে’ গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জালাল উদ্দিন খাঁ’র গানের পর্ব শুরু হয়। এই পর্বে জালাল উদ্দীন খাঁ’র ‘এপার আমি ওপার তুমি কিসে দিবো পাড়ি তার’, ‘দেখলে ছবি পাগল হবি’, ‘আমার আমার কে কয় কারে ভাবতে গেল চিরকাল’, ‘কি ছুরত বানালে খোদা’ এই চারটি গান গেয়ে শোনান নাজমুল আহ্‌সান তুহিন, নাজমুন নাহার পপি, মহিতোষ কুমার মণ্ডল ও আবুল কালাম আজাদ।

‘আমি গানের মালা গাঁথিয়া রাখিলাম’ গানটি সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় সরকারের গানের পর্ব। এ সময় একক কণ্ঠে ‘পোষা পাখি উড়ে যারে’, ‘জানিতে চাই দয়াল তোমার আসল নামটা কি’ গেয়ে শোনান ‘মো. মোন্তাজউর রহমান মানিক ও সরদার মো. রহমাতুল্লা।

‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান’ গানটি সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শাহ্‌ আবদুল করিমের গানের পর্ব। পরে ‘দরদিয়া রে বন্ধু, দরদিয়া রে’, তুমি আমার আমি তোমার’, ‘কথা রাখ কাছে থাক যাইয়ো না গো দূরে’ গানগুলো একক কণ্ঠে পরিবেশন করেন সঞ্চিতা বর্মণ, মর্জিনা খাতুন মিতু ও মো: খায়রুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শেষভাগে কুটি মনসুরের ‘হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো’, ‘প্রেমের মরা সহজ নয়’ ও ‘কে বলে মানুষ মরে’ গানগুলো শোনান বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, নারায়ণ চন্দ্র শীল ও এরফান হোসেন। পরে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় লোকসঙ্গীতের এই আসর।

পুরো অনুষ্ঠানে যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন তবলায় তুলসী সাহা ও স্বরূপ হোসেন, দোতরায় রতন কুমার রায়, ঢোলে দশরথ দাস, মন্দিরায় প্রদীপ কুমার রায় ও বাঁশিতে মো. মামুন।