পঞ্চাশের দশকের শেষ থেকে আশির দশক পর্যন্ত কয়েকশো পপ গানে সুর দিয়েছেন বার্ট ব্যাকারাক।
Published : 10 Feb 2023, 12:35 PM
‘রেইন ড্রপস কিপ ফলিং অন মাই হেড’ গানের গীতিকার, যুক্তরাষ্ট্রের পপ সংগীতের কিংবদন্তি বার্ট ব্যাকারাক মারা গেছেন।
সিএনএন জানিয়েছে, বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসের নিজের বাড়িতে ব্যাকারাকের মৃত্যু হয়, তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
তিনবারের অস্কারজয়ী বার্ট ব্যাকারাকের জন্ম ১৯২৮ সালের ১২ মে মিজৌরির কানসাস সিটিতে। তার বেড়ে ওঠা নিউ ইয়র্কে।
পঞ্চাশের দশকের শেষ থেকে আশির দশক পর্যন্ত কয়েকশো গানে সুর দিয়েছেন তিনি। আর পুরো ক্যারিয়ারে তার লেখা ও সুর করা গানের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তার সুরে মন ছুঁয়েছে বহু সংগীতানুরাগীদের।
‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’, ‘আই স অ্যা লিটল প্রেয়ার’, ‘হোয়াট ডু ইউ গেট হোয়েন ইউ ফল ইন লাভ’, ‘দ্য লুক অব লাভ’, ‘ক্লোজ টু ইউ’, ‘ম্যাজিক মোমেন্টস’ তার তুমুল জনপ্রিয় কয়েকটি গান।
যুক্তরাষ্ট্রের ডাস্ট স্প্রিংফিল্ড, ডিওন ওয়ারউইক, টম জোন্স, নেইল ডায়মন্ড, কার্পেন্টারস এবং ক্রিস্টোফার ক্রসসহ বহু শিল্পী ব্যাকারাকের লেখা ও সুরের গানে গেয়ে নাম করেছেন।
দশকের পর দশক ধরে গান কাজ করে যাওয়া ব্যাকারাকের গান ‘সহজবোধ্য’ হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছিল। তার গান সমসাময়িক ‘রক অ্যান্ড রোল’, ‘ফাঙ্ক’, ‘ডিস্কো’ বা নানা ধরনের ট্রেন্ডি গান থেকে ভিন্ন ছিল।
তবে ব্যাকারাক তার ক্যারিয়ারে অংসখ্য গানে আরেক কিংবদন্তী গীতিকার হ্যাল ডেভিডের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন। ১৯৫৭ সালে নিউ ইয়র্কের ব্রিল বিল্ডিংয়ে ডেভিডের সঙ্গে দেখা হয় বার্টের। তার পরেই তারা জুটি বেঁধে গান তৈরি করেন।
ওই বছরেই সাফল্য পায় ব্যাকারাক-ডেভিড জুটি। এছাড়া ব্যাকারাক ও ডেভিড শুধুমাত্র ষাটের দর্শকেই মার্কিন সংগীতাঙ্গনকে ৬০ থেকে ৭০টি ‘হিট’ গান উপহার দেয়।
বার্ট ব্যাকারাক ও হ্যাল ডেভিডের লেখা ‘রেইনড্রপস কিপ ফলইন মাই হেড’ শিরোনামের গানটির জন্ম ১৯৬৯ সালে। মৌলিক গানের জন্য অস্কার জিতে নেওয়া গানটি ১৯৭০ সালের জানুয়ারি মাসে চার সপ্তাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও নরওয়েতে বিলবোর্ডের একশো গানের টপচার্টের শীর্ষে ছিল। ওই বছরে এই গানটির ২ মিলিয়ন অ্যালবাম বিক্রি হয়।
'রেইনড্রপস কিপ ফলইন মাই হেড’ গানটি জীবনের ‘আশা জাগানিয়া’ একটি গান। ওই গানে এমন এক সংগ্রামী মানুষকে সুরে-কথায় আঁকা হয়েছে, যিনি উপলব্ধি করেন কষ্টের অবসান হবেই, সুখ তাকে অভ্যর্থনা জানাতে খুব বেশি সময় নেবে না।
এছাড়াও ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’ গানের হাত ধরে রাতারাতি সাফল্য পান ব্যাকারক ও ডেভিড। সংগীতশিল্পী মার্টি রবিন্সকে দিয়ে তারা গানটি করান। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রে গানটি দারুণ সাড়া ফেলে।
ব্যাকারাকের মৃত্যুর পর এক বিবৃতিতে মার্কিন শিল্পী ডিওন ওয়ারউইক জানিয়েছেন, “মনে হচ্ছে পরিবারের সদস্যকে হারালাম। এমন একজন সম্পর্কে বলতে হচ্ছে আমাকে, যিনি সংগীতের শেকড়ের একটি অংশ নিয়ে চলে গেলেন। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।”
ব্রিটিশ সংগীতজ্ঞ টমাস বার্গেসও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, "বিদায় বার্ট ব্যাকারাক, তুমি রাজা ছিলে, তাই থাকবে।”
কাজের স্বীকৃতিতে তিন বার অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ব্যাকারাক। পাশাপাশি তার ঝুলিতে রয়েছে ছয়টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস। ২০১৩ সালে তার আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়, যার নাম ‘এনিওয়ান হু হ্যাড অ্যা হার্ট’।