রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় এফডিসি প্রাঙ্গণে ইলিয়াস কাঞ্চনকে শপথবাক্য পাঠ করান মিশা সওগাদর।
পরে ইলিয়াস কাঞ্চন সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তারসহ উপস্থিত কমিটির নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান।
আগামী দুই বছর চলচ্চিত্র ও শিল্পীদের উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেন নতুন কমিটির দায়িত্ব নেওয়া শিল্পীরা।
শপথবাক্য পাঠ করানো শেষে মিশা সওদাগর বলেন, “বিজয়ীদেরকে অভিনন্দন জানাই। শিল্পী সমিতির যে কোনো প্রয়োজনে আমি পাশে থাকব।”
ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল থেকে বিজয়ীরা শপথ নিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও মিশা-জায়েদ খান প্যানেল থেকে নির্বাচিত কোনো সদস্য ছিলেন না।
শপথের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানসহ অনেকে।
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে গত দুই বার জয়ী মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বে প্যানেল হয়েছিল।
গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জায়েদ খান হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩ ভোটে হারিয়েছেন নিপুণকে।
নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন।
সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন।
পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।
তার আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেছিলেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহান।
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে শনিবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান।
তবে বৈঠকে যাবেন না বলে আগেই জানিয়ে দেন গত দুই বারের সম্পাদক জায়েদ খান; তিনি বলেন, “২৯ জানুয়ারির পর থেকে আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।”
শেষ পর্যন্ত আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিজয়ী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের পর নিপুণ আক্তারকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় শনিবার।
সহ-সভাপতি পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল, মাসুম পারভেজ রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শাহানুর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মামনুন ইমন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক পদে আরমান, কোষাধ্যক্ষ পদে আজাদ খান জয়ী হয়েছেন এবার।
এ ছাড়া কার্যকরী সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন অঞ্জনা সুলতানা (২২৫), রোজিনা (১৮৫), অরুণা বিশ্বাস (১৯২), সুচরিতা (২০১), আলীরাজ (২০৩), মৌসুমী (২২৫), চুন্নু (২২০) আর কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের ফেরদৌস (২৪০), কেয়া (২১২), জেসমিন (২০৮) ও অমিত হাসান (২১৭)।
তাদের মধ্যে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা শপথ নিলেও মিশা-জায়েদের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডিপজল, রুবেল, জয় চৌধুরী, রোজিনা, অঞ্জনা, অরুণা বিশ্বাস, সুচরিতা, আলীরাজ ও মৌসুমী শপথ নিতে আসেননি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে রোজিনা শপথ অনুষ্ঠানের আগে বলেছিলেন, “আমি কমিটিতে থাকি কিংবা না থাকি-এটা কোনো ব্যাপার না। আমি চলচ্চিত্রের মানুষ। চলচ্চিত্রের বিষয়ে আমি কাজ করব। কমিটির বাইরে থাকলেও চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য আমি কাজ করে যাব। যদি কখনও কেউ ডাকে, যদি আমি ফ্রি থাকি কাজ করব।”
আর আলীরাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “শিল্পী সমিতির যখন সমঝোতার মাধ্যমে সবকিছু সুন্দরভাবে হবে, সুন্দরের মধ্যে আমি অবশ্যই থাকব।”