সম্পর্ক, বিয়ে ও বিচ্ছেদ কোনও অপরাধ নয়: মিথিলা

বিচ্ছেদের পাঁচ বছর পর অভিনেতা তাহসান রহমান খানের সঙ্গে এক ‘সারপ্রাইজ লাইভ’ নিয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্যকারী তারকা সহকর্মীদের একহাত দিলেন অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2021, 09:50 AM
Updated : 17 May 2021, 10:22 AM

বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো শনিবার রাতে ইভ্যালির আয়োজনে ‘স্যাটারডে নাইট সারপ্রাইজ’ শিরোনামে এক লাইভ শো’তে অংশ নেন সাবেক এ তারকা জুটি।

দুজনকে জড়িয়ে প্রতিনিয়ত ফেইসবুকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের বিরুদ্ধে সেই আয়োজনে সোচ্চার হয়েছিলেন তাহসান-মিথিলা।

বিষয়টি নিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলেও তারকা সহকর্মীদের মধ্যেই কেউ কেউ এটিকে ‘ভালোভাবে নেননি’ বলে জানালেন মিথিলা; এমনকি দুইজন সহকর্মীর বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কথাও জানালেন তিনি।

রোববার এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে সেই সহকর্মীর নাম না উল্লেখ করে মিথিলা বলেছেন, “তাদের মধ্যে একজন লিখেছেন, ‘বিয়ে, ডিভোর্স…সব নাকি বেচে দিলাম ‘।”

সহকর্মীর এমন ‘বিরূপ’ মন্তব্যে বিষ্ময় প্রকাশ করে মিথিলা প্রশ্ন তুলেছেন, “…আপনি চাইছেন, বিচ্ছেদের পর দুইজন মানুষ পেশাদার কোনও কাজে যুক্ত হতে পারবে না? পাবলিক ফিগাররা তাদের সম্পর্ক, বিয়ে ও বিচ্ছেদের কথা লুকিয়ে রাখবে? তারা এটা কেন করবে? এটা কোনও অপরাধ নয়!

“আপনি চান, বিচ্ছেদের পর তারকাদের মুখ দেখাদেখি আজীবনের জন্য বন্ধ থাকবে? এটা কী আপনার জন্য স্বাভাবিক? “

ফেইসবুক স্ট্যাটাসে বলছেন, “আরেকজন তারকা লিখেছেন, ‘ডিভোর্সের পর এত শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব, আগে কই ছিল এই সব?’

তাকে উদ্দেশ্য করে এ অভিনেত্রী বলেন, “ভাই, আগেও ছিল। এখনও আছে। তবে দুটো দুই রকম। এত ব্যাখ্যা আপনাকে দিতে পারছি না। আপনি নেতিবাচক কথা না ছড়িয়ে নিজের চরকায় তেল দিলে সমাজ ও জাতি উপকৃত হবে।”

“কথিত শিক্ষিতদের বলছি, নিজেকে আরও শিক্ষিত করুন; বিচ্ছেদ নিয়ে ট্যাবু থেকে পরিত্রাণ পেতে আরও পড়াশোনা করুন। বিচ্ছেদের পরও একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজন মানুষ শ্রদ্ধা করতে পারে ও করা উচিত। বিশেষ করে যদি তাদের একটি সন্তান বেড়ে উঠে।

“আমি এটা লেখছি কারণ তারা সাধারণ কেউ নন, তারা কথিত শিক্ষিত ও পাবলিক ফিগার। তারা যদি নেতিবাচক কথা ছড়ানো না বন্ধ করে তাহলে আমাদের ভবিষ্যত অনুজ্জ্বল হবে।”

সম্প্রতি চঞ্চল চৌধুরী তার মা নোমিতা চৌধুরীর সঙ্গে একটি ছবি ফেইসবুকে প্রকাশ করে সাইবার হয়রানির কবলে পড়েছেন।

বিষয়টি তুলে ধরে শনিবার সেই লাইভ অনুষ্ঠানে তাহসান বলেছিলেন, “এটা শুধু আমার, মিথিলার কিংবা চঞ্চল চৌধুরীর বেলায় নয়, যেকোনও মানুষের পেইজেও কিছু মানুষ কটূ কথা বলছেন। এর মূল কারণ, আমাদের নিজেদের হীনমন্যতাকে অন্য দিকে প্রক্ষেপণ করতে চাই। এটা মানসিক ব্যধিকে রূপান্তরিত হয়েছে।

“এসব নিয়ে পাবলিক ফিগাররা কোনও কথা না বললে পরবর্তী প্রজন্ম বুঝবে না যে, কাউকে গালিগালাজ করার মধ্যে কোনও বীরত্ব নেই। এতে আমার মূর্খতাই প্রকাশ পায়; আমার পারিবারিক শিক্ষা কতটা কদর্য সেটাই প্রকাশ পায়। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে।”

কারও সঙ্গে মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেই কাউকে কদর্যভাবে আক্রমণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তাহসান।

“আমরা দুজনে হয়তো আলাদা হয়ে গেছি কিন্তু অপরকে কটূ বাক্য না বলে, অপমান না করে শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলতে পারি। এটা থেকেই পরবর্তী প্রজন্ম যেন শিখতে পারে, কারও সঙ্গে তোমার মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও তার সঙ্গে বসে সম্মানের সঙ্গে বসে কথা বলতে পারো, তাকে কদর্য কথা বলতে হবে না। এটাই আমি ভক্তদের বলতে চাই, আমরা চাইলেই পজেটিভিটি ছড়িয়ে দিতে পারি।”

ইভ্যালির ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন তাহসান; শনিবার থেকে যুক্ত হলেন মিথিলা।

২০১৭ সালের অক্টোবরে আনুষ্ঠানিকভাবে দাম্পত্যজীবনের ইতি টানার ঘোষণা দেন তাহসান-মিথিলা। তাদের একটি মেয়ে আছে।