জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে সুজেয় শ্যাম

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা সুজেয় শ্যাম।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2020, 09:33 AM
Updated : 27 May 2020, 09:33 AM

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে কু্র্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে তার মেয়ে রুপমঞ্জুরী শ্যাম জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বাবার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় ভালো। তবে করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় বুধবার বিকালের মধ্যে তার নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

দুই বছর ধরে মূত্রনালীর ক্যানসারে ভুগছেন এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক। কয়েক মাস আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি শ্বাসকষ্টের জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানান তার মেয়ে।

রুপমঞ্জুরী বলেন, দুদিন আগে শ্বাসকষ্টের সঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় মঙ্গলবার বিকালে ধানমণ্ডির এক হাসপাতালে এক ঘণ্টা অক্সিজেন দেওয়া হয় তাকে।  পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

১৯৪৬ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামকে সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি।

গিটার বাদক ও শিশুতোষ গানের পরিচালক হিসেবে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান চট্টগ্রাম বেতারে কর্মজীবন শুরু হয় সুজেয় শ্যামের। পরে তিনি ঢাকা বেতারে যোগ দেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থাকাকালে মোট নয়টি গানে সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম, যেগুলো একাত্তরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে রয়েছে ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘ওরে শোনরে তোরা শোন’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আজ রণ সাজে বাজিয়ে বিষাণ’। ছিল বিশ্বপ্রিয়র লেখা ‘আহা ধন্য আমার’, কবি দিলওয়ারের লেখা ‘আয়রে চাষী মজুর কুলী’।

তার সুর করা গানের মধ্যে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’ এবং ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গান দুটি যে কোনো জাতীয় দিবসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে।

১৯৬৯ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সুজেয় শ্যাম। ঢাকাই চলচ্চিত্র সংগীতে অবদানের জন্য তিনবার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বাংলাদেশ বেতারের প্রধান সঙ্গীত প্রযোজক পদ থেকে ২০০১ সালে অবসরে যান সুজেয় শ্যাম।

এরপর ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত ৪৬টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান’ শিরোনামে একটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তিনি।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে আরও ৫০টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান-২’ নামে আরেকটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন শিল্পী।

‘টুনাটুনি অডিও’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।