‘নিশাতের মতো সাহসী হতে হবে’

তরুণ নাট্যকর্মীদের থিয়েটার অঙ্গনের 'বিদ্রোহী কণ্ঠ' হিসেবে পরিচিত ইশরাত নিশাতের মতো সাহসী হওয়ার আহ্বান জানান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2020, 03:49 PM
Updated : 27 Jan 2020, 03:52 PM

সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সদ্য প্রয়াত ইশরাত নিশাত শোকাঞ্জলিতে এ কথা বলেন তিনি।

গত ১৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান নিশাত। তিনি প্রয়াত অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ারের কন্যা। তিনি 'দেশ নাটক' নাট্যদলের সাথে যুক্ত ছিলেন। মঞ্চে একাধারে অভিনেত্রী, নির্দেশক ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের আয়োজনে এ শোক সভায় রামেন্দু মজুমদার বলেন, “আমরা নানা কারণে সাহস করে সত্য কথাটা বলতে পারি না। অনেক সময় আপোষ করে চলতে হয়। নিশাত কখনো আপোষ করতো না। তরুণ নাট্যকর্মীদেরকে নিশাতের মতো সাহসী হতে হবে।”

নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, “নিশাত প্রথমে আরণ্যক নাট্যদলে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে দেশ নাটকের সঙ্গে যুক্ত হলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিশাত তাঁর কর্মগুণে হয়ে উঠে পুরো নাট্যাঙ্গনের। সবার আপন, সবার স্বজন ছিল নিশাত।”

তার মৃত্যুর পর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে অংশকে ‘নিশাত চত্বর’ ঘোষণার দাবি তুলেছিলেন থিয়েটারকর্মীরা। ছোটকাগজ ‘ক্ষ্যাপা’র সম্পাদক পাভেল রহমানের তোলা দাবির সঙ্গে থিয়েটার অঙ্গনের অনেকেই একাত্মতার কথা জানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

শোক সভার দিন নাট্যশালার একটি অস্থায়ী বোর্ড ঝুলিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে ‘নিশাত চত্বর’। সেখান থেকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের পর র‌্যালি করে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে যান আগতরা।

সেখানে নিশাতের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় বাঁশিতে বাজে করুণ সুর। পরে পরীক্ষণ মিলনায়তনে চলে গান, স্মৃতিকথা, আবৃত্তিসহ নানা স্মরণায়োজন। শোকাঞ্জলি পাঠ করেন আইরিন পারভীন লোপা।

গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ বলেন, “নাট্যকর্মীরা দাবি জানিয়েছেন, নাট্যশালার প্রবেশদ্বারের জায়গাটিকে নিশাত চত্বর ঘোষণা করার জন্য। কিন্তু এটি সরকারি জায়গা, ফলে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত সেটি অফিসিয়ালি ঘোষণা করা যায় না। তবে নাট্যকর্মীরা জায়গাটিকে নিশাত চত্বর হিসেবেই হৃদয়ে ধারণ করবে। এখানে আসলেই আমাদের নিশাতের কথা মনে পড়বে। ফলে জায়গাটি নিশাত চত্বর হিসেবেই আমাদের হৃদয়ে থাকবে।”

অনুষ্ঠানে নিশাতকে নিয়ে লেখা শোক বক্তব্য পাঠ করেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ। এছাড়া বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান, শিমূল ইউসুফ, আজাদ আবুল কালাম, ঠাণ্ডু রায়হান প্রমুখ। নিশাতকে উৎসর্গ করে কবিতা আবৃত্তি করেন আহকাম উল্লাহ।

ইশরাত নিশাতকে উৎসর্গ করে নাটক মঞ্চায়ন

গত বছরের শেষের দিকে নাগরিক নাট্যাঙ্গন মঞ্চে আনে নাটক ‘আকাসে ফুইটেছে ফুল- লেটোকাহন’। নাটকটির আলোক পরিকল্পনা করেছিলেন ইশরাত নিশাত। বুধবার নিশাতকে উৎসর্গ করে নাটকটি মঞ্চায়িত হলো ।

ড. রতন সিদ্দিকীর লেখা নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন হৃদি হক।