সংখ্যালঘুদের নিয়ে নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র 'হরিবোল'

বাংলাদেশের একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের সমাজ দ্বারা নীপিড়নের গল্পে নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘হরিবোল’।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2019, 11:48 AM
Updated : 29 July 2019, 11:48 AM

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতিত এক নারীর সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি সিনেমা নির্মাণ করতে বলেশ্বর জনপদের একটি গ্রামে যান একজন তরুণ নির্মাতা । সেই গ্রামেই তিনি সন্ধান পান এক নিপীড়িত সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের। এক গল্পের ভেতরে ঢুকে পড়ে অন্য এক নতুন গল্প। মুক্তিযুদ্ধ এবং সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারকে ঘিরে এমনই এক সমান্তরাল আখ্যানকে উপজীব্য করেই নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘হরিবোল’।

আনিসুজ্জামান নিবেদিত ও বলেশ্বর ফিল্মস প্রযোজিত 'হরিবোল' চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা রেজা ঘটক। ছবি'র কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন নির্মাতা রেজা ঘটক নিজেই।

'হরিবোল' চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে নির্মাতা রেজা ঘটক বলেন, “ফারাক্কা বাঁধের পর পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বলেশ্বর নদ ও তার শাখা-প্রশাখাগুলো ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। বলেশ্বর নদের তীরবর্তী জনপদের সেই দুঃখ-দুর্দশা, হতাশা-প্রত্যাশা, ভালোবাসা ও প্রচলিত জীবনযাপন ‘হরিবোল’ ছবি’র প্রেক্ষাপট। একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবার সমাজ কর্তৃক নিগৃহীত হয়ে কীভাবে ধীরে ধীরে মরা বলেশ্বরের মত নিঃস্ব হয়ে যায়, সেই কাহিনী এই ছবিতে ফুটে ওঠে।”

ছবিতে দুটি গল্পকেই সমান্তরালভাবে ফুটিয়ে তুলছেন নির্মাতা। চলচ্চিত্রটিকে একটি বিশেষায়িত চলচ্চিত্র আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্পের সাথে স্বাধীনতার পঁয়ত্রিশ বছর পর একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের উপর নেমে আসা প্রচলিত সমাজের নিপীড়নের চিত্র এতে ধরা হয়েছে। বড় ক্যানভাসে 'হরিবোল' একটি জনপদকে রিপ্রেজেন্ট করে। বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের উপর 'হরিবোল' একটি বিশেষায়িত চলচ্চিত্র। ”

প্রান্তিক গ্রামের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য যেমন এতে ফুটে উঠবে তেমনি নদী ও পরিবেশের কথাও বলবে ‘হরিবোল’ ।

নির্মাতা রেজা ঘটক জানান,  চিত্রায়ণ শেষে বর্তমানে 'হরিবোল' চলচ্চিত্রটির সম্পাদনার কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অগাস্ট মাসের মধ্যেই ছবিটির নির্মাণ সম্পন্ন হবে। পরবর্তীতে সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আসছে নভেম্বর মাসে বড়পর্দায় 'হরিবোল'  মুক্তি দিতে চান তিনি।

চলচ্চিত্রটির সম্পাদনা করেছেন প্রণব দাস। মিউজিক কম্পোজ করেছেন অংশুমান বিশ্বাস। সাউন্ড ডিজাইন করেছেন অরিজিৎ মিত্র। সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন- বাউল সফি মণ্ডল, সাত্যকি ব্যানার্জি, অংশুমান, নলীনি মণ্ডল প্রমুখ।

সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন মোস্তাফিজ ইসলাম, সেলিম হায়দার, জাহিদ হাসান, প্রণব দাস ও রেজা ঘটক। স্থিরচিত্র ধারণ করেছেন দেবাশিষ গুপ্ত, চিন্ময় চক্রবর্তী ও জাহিদ রবি।

‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন একঝাঁক নতুন মুখ।

মুক্তিযুদ্ধের উপর সিনেমা বানাতে আসা তরুণ নির্মাতা এসকে চৌধুরী'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজী ফয়সল। সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের কর্তা নিতাই'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইকতারুল ইসলাম। আর নিতাই'র পরিবারে নিতাই'র বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৃপ্তি সরেন। এছাড়া গ্রামে নিতাই'র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি রাঙা'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন এমরান হোসেন। হরি চেয়ারম্যানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেলিম হায়দার। পারু'র ভাই পলটু'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রণব দাস। নিতাই'র বন্ধু লখাই'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিয়াকত মোস্তফা লিকু। এসকে চৌধুরী'র এসিসট্যান্টের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইউসুফ ববি। ঝড়ু পাগলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান।

এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নলিনী মণ্ডল, রণজিৎ কুমার মণ্ডল, বিধান চন্দ্র বিশ্বাস, এমদাদুল হক হাওলাদার, মনোজ কুমার মন্ডল, যতীন্দ্র নাথ নাগ, শুকুরঞ্জন মোলোঙ্গী, মুক্তি মণ্ডল শেলী, ইলিয়াস খান, গৌতম কুমার মণ্ডল, প্রেমানন্দ আকার্শন, অনাদী বালা, জাকির হোসেন হাওলাদার, স্বপন পাল, জীবন কৃষ্ণ ঘরামী, সুনীল কুমার মণ্ডল, আরিফুল ইসলাম শিপুল, আকাশ সিংহ, অনিক, চন্দন, উৎস, অমিত, শুভ, সৈকত, সোহাগ প্রমুখ।