বন্ধু ফিরবেন, আশা ঋতুপর্ণার

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারে নেমে ‘কালো তালিকাভূক্ত’ হয়ে দেশে ফেরা চিত্রনায়ক ফেরদৌসের পাশে দাঁড়ালেন বন্ধু-অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2019, 02:59 PM
Updated : 19 April 2019, 10:04 AM

সপ্তাহখানেক আগে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘দত্তা’ অবলম্বনে নির্মতব্য চলচ্চিত্রে শুটিংয়ে যোগ দিতে কলকাতায় গিয়েছিলেন ফেরদৌস। চলচ্চিত্রে তার সহশিল্পী হিসেবে আছেন দীর্ঘদিনের বন্ধু ও অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে ছবিটির শুটিংয়ের এক ফাঁকে রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সমর্থনে প্রচারে অংশ নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেতা।

বিদেশি নাগরিক হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় তার বিজনেস ভিসা বাতিল করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তোপের মুখে শুটিংয়ে বিরতি রেখেই দেশে ফিরতে হয় দুই বাংলার জনপ্রিয় এ অভিনেতাকে।

কলকাতায় বাসু চাটার্জির ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পাওয়া ফেরদৌস ৫০টিরও বেশি কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এর মধ্যে ১৫টির মতো চলচ্চিত্রে তার সহশিল্পী ছিলেন ঋতুপর্ণা। পেশাদার সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিজীবনে তারা একে অপরের ভালো বন্ধুও।

গত দুই দশকজুড়ে কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস। পশ্চিমবঙ্গজুড়ে দারুণ জনপ্রিয়তা আছে তার। এবার তার ভিসা বাতিল হওয়ায় আবার কবে কলকাতার চলচ্চিত্রে দেখা যাবে-তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জটিলতা কাটিয়ে প্রিয় বন্ধু ও সহশিল্পী শিগগিরই কলকাতার চলচ্চিত্রে ফিরবেন বলে আশা করছেন ঋতুপর্ণা।

বৃহস্পতিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কলকাতায় ফেরদৌসের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কয়েক দশক ধরে ও কলকাতায় সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। আমার বিশ্বাস, আইনটা জানা ছিল না; থাকলে সে প্রচারণায় যেত না।”

তার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত বলে মনে করেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।

তাকে নিয়ে নির্মিতব্য ‘দত্তা’ চলচ্চিত্রের ৮০ ভাগ শুটিং এখনও বাকি আছে। সংশয়ের মাঝেও চলচ্চিত্রটি থেকে খ্যাতিমান এ অভিনেতাকে ‘হারাতে চান না’ বলে জানালেন ছবিটির নির্মাতা নির্মল চক্রবর্তী।

ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসকে এ নির্মাতা বলেন, “আগামী জুনে বাকি অংশের শুটিং হওয়ার কথা। আশা করছি ততদিনে সবটা মিটে যাবে। প্রায় ২০ বছর ধরে ফেরদৌস কলকাতায় আসছে, কাজ করছে। একটা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছে, তার জন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করেছে। মনে হচ্ছে ঠিক হয়ে যাবে।”

বুধবার দেশে ফিরে ফেরদৌস এক বিবৃতিতে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, ‘আবেগের বশে’ পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে তার অংশ নেওয়াটা ‘ভুল’ ছিল বলে এখন বুঝতে পারছেন তিনি।

“আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনভাবেই উচিত নয়।

“আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”