নাট্যকার মমতাজউদ্দীন আহমেদ আইসিইউতে

নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজউদ্দীন আহমেদ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আইসিইউতে রয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2018, 06:38 PM
Updated : 15 Oct 2018, 06:38 PM

ফুসফুসের সংক্রমণ ও অ্যাজমার সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে থাকা এই অধ্যাপকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সোমবার রাতে তাকে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে অধ্যাপক মমতাজউদ্দীনের সরাসরি ছাত্র ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার দীর্ঘ দিন থেকে ফুসফুসের সংক্রমণ ও অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন। কিছু দিন ধরেই স্যারের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। 

“আজ (সোমবার) বিকালের দিকে স্যার একেবারেই শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে তাকে অ্যাপোলোতে আনা হল। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানা গেছে, হি ইজ নট আউট অব ডেঞ্জার।”

মমতাজউদ্দীনের দুই ছেলেই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। বাবার অসুস্থতার খবর শুনে দুজনই রওনা হয়েছেন দেশের পথে।

১৯৩৫ সনে ১৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মমতাজউদ্দীন।

রাজশাহী সরকারি কলেজে পড়ার সময়ই রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে যুক্ত হন তিনি। রাজশাহীর তৎকালীন ছাত্রনেতা ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর সান্নিধ্যে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ভাষার দাবিতে আন্দোলন সংগঠনে তিনি ভূমিকা পালন করেন।

১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারির রাতে রাজশাহী সরকারি কলেজের মুসলিম হোস্টেলের ইট কাদামাটি দিয়ে যে শহীদ মিনার গড়ে উঠেছিল, তাতে মমতাজউদ্দীনও ভূমিকা রেখেছিলেন। তখন জেল খেটেছেন একাধিকবার।

কর্মজীবনে মমতাজউদ্দীন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও পরে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে অধ্যাপনা করেন।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়ন কমিটিতে একজন উচ্চতর বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ছিলেন তিনি।

তার লেখা নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ এবং ‘রাজার অনুস্বারের পালা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল।

নাট্যচর্চায় অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক পান ১৯৯৭ সালে।

এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার জিতে নিয়েছেন।

তার রচিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নাট্যত্রয়ী’, ‘হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার, ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘জমিদার দর্পণ’, ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’।

নিয়মিত চিত্রনাট্য রচনা ছাড়াও তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত’, ‘নীলদর্পণ’ (সম্পাদনা), ‘সিরাজউদ্দৌলা’ (সম্পাদনা)।