নদীর অববাহিকায় সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা গ্রাম। নানান প্রকল্পের নাম করে নদীর উপর একের পর এক বাঁধ নির্মিত হয়েছে। উজানে বাঁধের কারণে ভাটি অঞ্চল পরিণত হচ্ছে মরুভূমিতে। কৃত্রিম সেচে চাষাবাদ হচ্ছে, কিন্তু তার নিয়ন্ত্রণ থাকছে গ্রামের প্রভাবশালীদের হাতে। সাধারণ কৃষক সেখানে অসহায়।
কৃষকের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে দাদন ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলো। এক দিকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির চাপ, অন্য দিকে কৃষির জন্য বৈরি পরিবেশ। গ্রাম ছেড়ে কৃষক শহরে যাচ্ছে, হাত দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। হয়ত দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে ফিরে আসছে গ্রামে।
এমন সব চলমান ঘটনার বিপরীতে থাকা একজন সাধারণ কৃষক ফজলু। মা-বাবাহীন ফজলু বিয়ে করে উজানের গ্রামের মেয়ে পতুলকে। তাদের পরিবারে নতুন সদস্য হয়ে আসে একটি গরু। ফজলু, পুতুল আর তাদের গরুকে ঘিরে এগোতে থাকে ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রের গল্প।
এ সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন ফজলুল হক এবং আইনুন পুতুল। উন্মুক্ত অনুদানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে চান নির্মাতা খন্দকার সুমন। তিনি একে বলছেন ‘গণ অর্থায়ন’।
গ্লিটজের কাছে বিষয়টি তিনি ব্যখ্যা করলেন এভাবে- “কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর জীবন যাপন, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় আবর্তিত হয়েছে ‘সাঁতাও’-এর গল্প। প্রথাগত নির্মাণের বাইরে এসে অর্থ সংগ্রহের জন্য গণ অর্থায়নের পরিকল্পনা করেছি আমরা। আমরা চাই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব ছাড়াই আমাদের বলতে চাওয়া গল্পটিকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকের সামনে হাজির করতে।”
স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণের এই উদ্যোগে সকলকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সুমন। যারা অনুদান দিতে চান, ‘সাঁতাও’ এর ওয়েবসাইটে (saatao.khandakersumon.com ) এবং ফেইসবুক পেইজে (facebook.com/saatao) গিয়ে তারা চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং অর্থায়ন পরিকল্পনা জানতে পারবেন।
এর আগে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অঙ্গজ’ ও ‘পৌনঃপুনিক’ নির্মাণ করে দেশে ও দেশের বাইরে প্রশংসিত হয়েছেন খন্দকার সুমন।