গ্লিটজ: কবে ছাড়া পেয়েছেন আপনি?
অনন্য মামুন: আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় ৮ জানুয়ারি মুক্তি পাই। ট্রানজিট পাস দিয়ে আগামীকাল দেশে পাঠানোর বন্দোবস্ত করেছে মালয়েশিয়ান পুলিশ।
গ্লিটজ: আপনাকে কেন গ্রেপ্তার করেছিল?
অনন্য মামুন: আমি আসলে ষড়যন্ত্রের শিকার। শো’র তিনদিন আগে সেখানকার কয়েকজন চাঁদাবাজ আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেছিল। আমি দিইনি। পরে তারা বলে, পাঁচ’শ টিকিট ফ্রি দিতে হবে। তাও না দিলে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
শো’টি যাতে ঠিকঠাক ভাবে না করতে পারি সেকারণেই তারা আমার ব্যাপারে ভুল তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছিল পুলিশের কাছে। তারা বলেছিল, ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া মালয়েশিয়ায় এসেছি আমরা।
আসলেই তথ্যটি ঠিক কিনা সেটা জানার জন্যই পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যায়।
গ্লিটজ: কোথা থেকে আপনাকে আটক করা হয়?
অনন্য মামুন: আমি তখন হোটেলে ছিলাম। অনেকে বলেছে, পুলিশ আমাকে খুঁজে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ঘটনা সত্যি না।
পুলিশ হোটেল আসাতে অনেকে আমাকে বলেছে, ‘ভাই যাবেন না। এখানকার পুলিশ খুব কড়া।’ কিন্তু আমি বলেছি, আমার যাবতীয় কাগজপত্র তো বৈধ। তাহলে আমার সমস্যা কী?
আমিই পুলিশের সঙ্গে গিয়েছি। আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। মূলতঃ তদন্তের খাতিরে অ্যারেস্ট করা হয় আমাকে।
গ্লিটজ: যারা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল তারা আসলে কারা? আপনার পরিচিত?
গ্লিটজ: গণমাধ্যমে খবর এসেছে, আপনি নাকি মানবপাচারের বিষয়ে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন?
অনন্য মামুন: এটি ভূয়া খবর। মালয়েশিয়ার সেরা দশজন পুলিশ অফিসারদের একজন মি.চাও। ওনাকে সেখানকার সবাই চেনে। আমার বিষয়টি দেখভাল করেছেন। আমার রিপোর্টগুলো দেখে উনি হেসেছেন। ওনার সঙ্গে কথা বললেই বুঝতে পারবেন আসলে আমি কোনো স্বীকারোক্তি দিয়েছি কিনা।
গ্লিটজ: আপনাকে মারধরের খবরও এসেছে মিডিয়ায়। থানায় কাটানো ১৪ দিন কেমন ছিল?
অনন্য মামুন: আমাকে পুলিশ কোনও মারধর করেনি। থানায় থাকাকালীন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি।
থানায় থাকাকালীনই শুনলাম, কে যেন আমার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবে! শুনে হেসেছি। ওদের এই কাজটা আর হলো না!
১৪ দিনের তদন্তে আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
পরে বাংলাদেশি অ্যাম্বাসীতে বিষয়টি নিয়ে একটি লেটারও পাঠিয়েছে ওরা। জানিয়েছে, তদন্তের খাতিরে আমাদের থানায় নেওয়া হয়।
তবে এটা ঠিক, এ কয়দিনে কিছু মানুষকে চিনেছি আমি। কে আমার প্রকৃত বন্ধু আর কে শত্রু তা অজানাই থাকত যদি এ ঘটনা না ঘটত।
গ্লিটজ: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি আপনাকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করেছেন। শুনেছেন নিশ্চয়ই?
অনন্য মামুন: সমিতি আমাকে ব্যান করেছে এটা নিয়ে কোনও কষ্ট নাই আমার। কিন্তু সমিতি কি একবারও আমার খবর নিয়েছে, কেন আমাকে গ্রেপ্তার করা হল?
আমার ফ্যামিলি কীভাবে আছে-তার খবর কি নিয়েছে সমিতি?
পত্রিকার নিউজ দেখে যদি আমাকে ব্যান করে তাহলে আগামীকাল যখন নিউজ আসবে আমি নির্দোষ তখন তো সদস্যপদ ফেরত পেতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।
গ্লিটজ: আপনার সঙ্গে যাওয়া শিল্পীরাও তো আপনাকে নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে ফেইসবুকে।
অনন্য মামুন: অনলাইনে ছিলাম না বলে বিষয়টি চোখে আসেনি। তবে ইমিগ্রেশনে ছয় ঘণ্টা ওয়েট করতে হয়েছে আমাদের। সেটা নিয়ে হয়ত ওরা বলতে পারে।
কিন্তু গত একমাস ধরে বাংলাদেশি সব যাত্রীদের জন্যই এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয়। বাংলাদেশের জন্য ইমিগ্রেশন আলাদা করে দিয়েছে। তবে এর বাইরে ওদের বলার কিছু নেই।
গ্লিটজ: দেশে ফিরছেন কখন?
অনন্য মামুন: শনিবারের মধ্যেই ফিরব। ফিরে প্রেস কনফারেন্স করব। সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট সাংবাদিকদের সামনে সাবমিট করব।