‘গাটসি’ হতে কী দরকার, যা বললেন হিলারি-চেলসি

মা-মেয়ে দুজনই অ্যাপল টিভি প্লাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আট পর্বের একটি প্রামাণ্যচিত্রের জন্য।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2022, 05:27 PM
Updated : 22 Sept 2022, 05:27 PM

এমন একটি সময় যখন বেশিরভাগ আলোচনা রাজনীতি আর নারীর অধিকার ঘিরে আবর্তিত, উভয় ক্ষেত্রেই দুই চেনা মুখ তুলে ধরবেন নারীর সাহসিকতাকে।

তারা হলেন হিলারি ক্লিনটন এবং তার মেয়ে চেলসি ক্লিনটন। দুজনই অ্যাপল টিভি প্লাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আট পর্বের একটি প্রামাণ্যচিত্রের জন্য। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলার ‘দ্য বুক অব গাটসি উইমেন’ বই অবলম্বনে নির্মাণ করা হচ্ছে এই ডকুসিরিজ, যার নাম ‘গাটসি’ অর্থাৎ নির্ভীক বা সাহসী।

সপ্তাহ দুয়েক আগে সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মা ও মেয়ে তাদের নিজেদের নির্ভীক হওয়ার মুহূর্তগুলো নিয়ে কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি হিলারি ক্লিনটন বলেন, “আমার ব্যক্তগত জীবনে, আগেও বলেছি আমি, বিলের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ থাকার সিদ্ধান্তটা ছিল আমার জন্য সত্যিকারের ‘গাটসি’ সিদ্ধান্ত, সেটা ছিলো একটি কঠিন সিদ্ধান্ত।

“এর জন্য আমাকে অনেক প্রার্থনা করতে হয়েছে, অনেক ভাবতে হয়েছে, পরামর্শ নিতে হয়েছে। আমি খুবই খুশি যে আমি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমার কোনো খেদ নেই, কিন্তু সেটা ছিল একটা সাহসী সিদ্ধান্ত, কারণ পৃথিবীর বাকি সবারই অন্য একটি মতামত ছিল।”

ফার্স্টলেডি হিলারি পরে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়ে ভোটের লড়াইয়েও নেমেছিলেন।

তিনি বলেন, “জনসমক্ষে, জীবনের প্রকাশ্য অংশটিতে, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়া ছিল আরেকটি ‘গাটসি’ মুহূর্ত। আমি বলতে চাইছি, এটা হচ্ছে সর্বোচ্চ উচ্চতায় টানটান করে বাঁধা রশির উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার মতো, যার নিচে কোনো সুরক্ষা জাল নেই।

“কারণ আর কোনো নারী (যুক্তরাষ্ট্রে) এর আগে এটা করেনি এবং এটা ছিলো অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ ও বিষয়াদিতে পরিপূর্ণ এক অভিজ্ঞতা। তবে আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ আমি এই কাজটি করার একটি সুযোগ পেয়েছিলাম।” 

চেলসি ক্লিনটন বেড়ে উঠেছেন এক প্রচণ্ড নজরদারির মধ্যে যখন তার বাবা বিল ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত। তার কাছে সবচেয়ে সাহসিকতা হচ্ছে ‘নিজের জীবন পরিচালনা’ করা।

বর্তমানে তিন সন্তানের জননী চেলসি (৪২) বলেন, “জন্মের ক্ষণ থেকেই আমি ছিলাম একজন ‘পাবলিক ফিগার’। এটি ছিল আমার মা-বাবার পেশাগত, রাজনৈতিক জীবনের জন্য। তাই খুব ছোট বয়সেই আমি সচেতন হয়ে উঠি যে আমার কী করা উচিৎ, কোন কাজটি আমার উপযুক্ত হচ্ছে, কারণ তা নিয়ে জনগণের মতামত থাকবে।”

এই ডকুসিরিজের উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে থাকছে অনেক নারীর জীবনে নজরদারি কিংবা গণবিচারের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া। এই সিরিজে হিলারি ও চেলসি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, যাদের কেউ পরিচিত, কেউ অচেনা, তাদের জীবন, ক্যারিয়ার ও ভাবনা নিয়ে।

প্রথম পর্বের বিষয়বস্তু হচ্ছে নারী ও হাস্যরস। সিএনএনকে চেলসি বলেছেন, তিনি বেড়ে উঠেছেন ‘নক-নক’ কৌতুকের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে এবং কমেডির সঙ্গে তার এক জটিল সম্পর্ক ছিল। কারণ ছোটবেলাতেই তিনি ‘এসএনএলে’র মতো অনুষ্ঠানে শিশু চরিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।

আরেকটি পর্বে র‌্যাপার মেগান দি স্ট্যালিয়নের সঙ্গে আলাপ করেন তারা এবং তাদের আলোচনায় উঠে আসে ‘হেটার’ (ঘৃণা/কুৎসা রটনাকারী) প্রসঙ্গ।

চেলসি ক্লিনটন সিএনএনকে বলেন, তিনি র‌্যাপার মেগানের দৃষ্টিভঙ্গীতে মুগ্ধ যেভাবে র‌্যাপার তার নিজের জীবনের আনন্দ উপভোগ করার চেষ্টা করেছেন ‘হেটার’দের উপেক্ষা করে। তিনি এই শিক্ষাটি মেগানের কাছ থেকে নিয়েছেন।

হিলারি ক্লিনটন জানালেন, জনজীবনের শুরুর দিকেই তিনি শিখে নিয়েছিলেন যে সমালোচনায় গুরুত্ব দিতে হবে, তবে তা ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া যাবে না।

অ্যাপল টিভি প্লাসে ‘গাটসি’ প্রচার শুরু হয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে।