সংস্কৃতি উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে তিনি পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Published : 11 Nov 2024, 01:38 AM
দেশের জন্য কিছু করতে পারার ইচ্ছা এবং মুহাম্মদ ইউনূসের সহকর্মী হওয়ার ‘প্রলোভন’ থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হতে চেয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
উপদেষ্টা হিসেবে রোববার সন্ধ্যায় শপথ নেওয়ার পর এই চলচ্চিত্র নির্মাতা সরকারে যুক্ত হওয়ার কারণ তুলে ধরেন।
মধ্যরাতে ফারুকী ফেইসবুক পোস্টে বলেন, "আমি কখনই কোনো আনুষ্ঠানিকতায় আবদ্ধ থাকিনি। তবুও আমি আজ সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলাম দেশের সেবা করার জন্য।"
এর পেছনে দুটি কারণ তুলে ধরেন গত দুই দশক ধরে চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক বানিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া ফারুকী। বলেন, "দেশের জন্য কিছু করতে পারার ইচ্ছা সর্বদাই আমাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে এবং অধ্যাপক ইউনূসের সহকর্মী হওয়াটা সর্বদাই লোভনীয় ব্যাপার।"
১৯৯৮ সালে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'ছবিয়াল' থেকে ফারুকীর প্রথম নির্মাণ ’ওয়েটিং রুম’, সেই সময় কোনো টিভি চ্যানেল কিনতে চায়নি ফিকশনটি।
তার চলচ্চিত্র নির্মাণের ২৫ বছরে এসে এই চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ফারুকীর নামের আগে যুক্ত হয়েছে বিশেষণ। তিনি এখন অন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
নির্মাতা ফারুকীর নামের সঙ্গে এবার যুক্ত হল, আরেকটি পালক। তিনি এখন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাসের মাথায় মুহাম্মদ ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদে আরও তিনজন নতুন সদস্য যোগ দিয়েছেন, তাদের একজন ফারুকী।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাদের শপথ পাঠ করান।
বাকি দুই উপদেষ্টা হলেন ব্যবসায়ী শেখ বশির উদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম।
পরে রাতে উপদেষ্টা পরিষদে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালিয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফারুকীকে।
নতুন এ যাত্রায় সবার মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ারও আহ্ববানও জানিয়েছেন তিনি।
ফারুকী বলেন, "আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি কিছু পরিবর্তন আনার জন্য আমি কাজ করে যাব।"
ফারুকীর মালিকানাধীন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম 'ছবিয়াল’। এ কোম্পানির ব্যানারেই তিনি নির্মাণ করে আসছেন বিজ্ঞাপন, নাটক, সিনেমা।
ছবিয়ালের উল্লেখযোগ্য ফিকশন ও ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে রয়েছ ‘আয়শা মঙ্গল’, ‘প্রত্যাবর্তন’, ‘কানামাছি, ‘চড়ুইভাতি, ‘৬৯’, ‘৫১বর্তী, ‘৪২০’।
সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘ব্যাচেলর’, ‘টেলিভিশন’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘ডুব’, পিঁপড়াবিদ্যা’।
ফারুকী নির্মিত ’ডুব’, ইংরেজিতে ’নো বেড অব রোজেস’– সিনেমাটি যেবার বাংলাদেশ থেকে অস্কার প্রতিযোগিতায় গিয়েছিল, সেবছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন ভ্যারাইটিতে ম্যাগি লি লেখেন, ’ফারুকী প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অনন্য কণ্ঠস্বর।’