কোভিড মহামারীর লকডাউনের সময় ভারতে দরিদ্র শ্রমিকদের দুর্দশরা পেক্ষাপটে নির্মিত সিনেমা ‘ভিড়’- এর ট্রেইলার প্রকাশের পর সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে টি-সিরিজের ইউটিউব থেকে।
ইন্ডিয়াটাইমস ডটকম জানিয়েছে, টি-সিরিজ তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ‘ভিড়’ সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশ করে এক সপ্তাহ আগে। এরপর থেকে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা-বিতর্ক শুরু হয় সোশাল মিডিয়ায়।
ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ পাওয়া ওই ট্রেইলার নিয়ে অনেকেই সোশাল মিডিয়ায় মন্তব্য করেন। কেউ কেউ মত দেন, মহামারীর লাগাম টেনে ধরতে সরকারের ব্যবস্থাপনার ‘নেতিবাচক’ দিক নির্মাতা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন। আবার সিনেমার পরিচালক অনুভব সিনহাকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যাও দিয়েছেন কেউ কেউ।
টি-সিরিজ তাদের চ্যানেল থেকে সরিয়ে নিলেও ইউটিউবে সিনেমার টিজারটি পাওয়া যাচ্ছে।
সাইত্রিশ সেকেন্ডের টিজারে নির্মাতা দেখিয়েছেন, দেশে মহামারী হানা দিলে হঠাৎ করে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহনও। বাধ্য হয়ে পরিবার-সন্তান নিয়ে পায়ে হেঁটে অন্য রাজ্যে নিজেদের বাড়ি ফেরার পথ ধরতে হয় কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের।
পেট চালাতে বাড়ি ফিরতে না চাওয়া এবং কারখানার সামনে অবস্থান নেওয়া শ্রমিকদের উপরে পুলিশি নির্যাতন আর পায়ে হেঁটে এবং খোলা ট্রাকে-বাসে গাদাগাদি করে শ্রমিকদের শহর ছাড়ার ‘অমানবিক’ দৃশ্য স্পষ্ট করেছে কোভিডকালীন খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশার সময়টি।
‘ভিড়’ এর ট্রেইলার গায়েব হওয়ায় এক টুইটারে একজন লিখেছেন, “সমালোচনার পর ভিড় সিনেমার অফিসিয়াল ট্রেইলার এখন ইউটিউবের ব্যক্তিগত জিম্মায় আছে।”
“দেশে মাত্রাতিরিক্ত গণতন্ত্র বিরাজমান” লিখে কটাক্ষ করেছেন একজন।
‘ভিড়’ সিনেমাকে ‘প্রতিটি ভারতীয়র কণ্ঠস্বর’ বলেছেন এক দর্শক। তার মতে, এই সিনেমায় মহমারীকালে দেশের মানুষের দুর্দশা ফুটে উঠেছে। তিনি বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ তুলেছেন ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে।
‘ভিড়’ সিনেমাটিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, ভূমি পেডনেকার। বিশেষ চরিত্রে আছেন দিয়া মির্জা।
সামাজিক সচেতনতামূলক সিনেমার জন্য বলিউডের অন্যতম পরিচিত মুখ অনুভব সিন্হা। ‘থাপ্পড়’, ‘আর্টিকেল ১৫’, ‘মুল্ক’, ‘অনেক’-এর মত ‘প্রশংসিত’ সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি।
আগামী ২৪ মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে ‘ভিড়’।