মনের অসুখ জয় করে দীপ্যমান দীপিকা

“বিষণ্নতায় ভুগে আমি শুধু ঘুমাতেই চাইতাম, কারণ মনে হত ঘুমানোই সব কিছু থেকে পালাবার পথ, বলেন দীপিকা।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2022, 08:59 AM
Updated : 7 August 2022, 08:59 AM

আলো ছড়ানো বলিউড তারকা দীপিকা পাড়ুকোনের জীবনেও আঁধার সময় এসেছে। খ্যাতির মধ্যে থেকেও এ অভিনেত্রী ভুগেছেন মনের অসুখে।

অবসাদে-বিষণ্নতার কাছে পরাস্ত হয়ে আত্মহত্যার চিন্তাও খেলেছে দীপিকার মনে। সেই ব্যাধি জয় করতে তিনি পাশে পেয়েছেন নিজের মাকে।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ডিপ্রেশন’ এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসার যুদ্ধের কথা বলেছেন এই বলিউড তারকা।

দীপিকা জানান, তার বিষণ্নতার লক্ষণ ধরতে পেরেছিলেন তার মা। সেটি ধরতে পেরে মেয়েকে সুস্থ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছিলেন।

হতাশা আর অবসাদের সঙ্গে কীভাবে লড়তে হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি তেমন কোন কারণ ছাড়াই ভেঙে পড়তাম। এমনও অনেক দিন গেছে যখন আমি ঘুম থেকে উঠতে চাইতাম না। আমি শুধু ঘুমাতেই চাইতাম, কারণ মনে হত ওটাই সব কিছু থেকে পালাবার পথ। মাঝেমধ্যে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথাও ভেবেছি।“

দীপিকা বলেন, বেঙ্গালুরু থেকে তার বাবা-মা যখন মুম্বাইয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, তিনি তাদের সামনে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করতেন।

“আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতাম যে সবকিছু ঠিক আছে। যারা মানসিক অবসাদে ভোগেন, তাদের মধ্যে এই চেষ্টাটা থাকে। তারা দেখাতে চায় যে তারা ভালো আছে।“

নিজের বিষণ্নতা নিয়ে দীপিকা যে এবারই প্রথম মুখ খুললেন, তা নয়। এর আগে অমিতাভ বচ্চনের ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ রিয়েলিটি শোতে এ সমস্যার কথা বলেছিলেন তিনি।

এই নায়িকা সে সময় বলেছিলেন, ২০১৪ সালে তার মধ্যে বিষণ্নতা দেখা দেয়। তার মনে হত, বেঁচে থাকাটাই বুঝি অর্থহীন।

“সে সময় আমি লক্ষ্য করি, বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলে না। যেন এটি একটি এমন ধরনের কলঙ্ক, যে কথা বলা যায় না। আবার ডিপ্রেশন নিয়ে মানুষ যে অনেক কিছু জানে, সেটাও নয়। সে সময় আমি বুঝতে পারি, আমি আমার কথা বলা শুরু করলে অবসাদে ভুগতে থাকা অনেকেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলবেন।“

তাই সে সময়ে দীপিকা ঠিক করেন, যদি একটি জীবনও তিনি বাঁচাতে পারেন, তাহলেই তিনি সফল।

মানসিক সমস্যা নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এই অভিনেত্রী। তাদের কাজ বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

শোতে বিগ বি’র (অমিতাভ বচ্চন) প্রশ্ন ছিল, দীপিকা কীভাবে বুঝলেন যে তিনি বিণ্নতায় ভুগছেন।

দীপিকার ‍উত্তর ছিল, “আমার ভেতরটা শূন্য মনে হয়। আমি কাজ করার আগ্রহ হারিয়েছিলাম, কারও সঙ্গে দেখা করতে চাইতাম না। বাইরে যেতে ভালো লাগত না। একটা সময়ে দেখা করতামও না, ঘরের বাইরেও যেতাম না।“

অকপটে তিনি বলেন, “জানি না বলা উচিত হবে কি না, কিন্তু আমি বাঁচার তাগিদ হারিয়ে ফেলেছিলাম। মনে হত, আমার জীবন চালিয়ে নিতে কোনো উদ্দেশ্য নেই, বাঁচতে ইচ্ছা করত না।“

তবে বিষণ্নতা-অবসাদকে জয় করে ধীরে ধীরে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনটি ফিল্মফেয়ার জয়ী এই অভিনেত্রী। বর্তমানে সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন বলিউডের শীর্ষ নায়িকাদের একজন দীপিকা।

আগামী বছর শাহরুখের সঙ্গে ‘পাঠন’ সিনেমায় দীপিকাকে দেখা যাবে। তামিল সুপারস্টার প্রভাসের সঙ্গে ‘প্রজেক্ট কে’ সিনেমাতেও কাজ করছেন তিনি।

হৃতিক রোশনের সঙ্গে ‘ফাইটার’ এবং অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘দ্য রিটার্ন’ এই দুই রিমেক সিনেমায়ও আছেন দীপিকা। এ ছাড়া আলিয়া ভাট-রণবীর কাপুরের ‘ব্রক্ষ্মাস্ত্র’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে তিনি পর্দায় আসবেন।