বিস্মৃত শিশুশিল্পীর রাজসিক প্রত্যাবর্তন অস্কারে

কে হুই কোয়ান বলছেন, যেজন্য পুরস্কার জিতেছেন তিনি, তা তার জীবনের গল্প।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2023, 03:34 PM
Updated : 13 March 2023, 03:34 PM

আশির দশকে হলিউডে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ের পর আড়ালেই ছিলেন কে হুই কোয়ান; তিন দশকের বেশি সময় পর ‘এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’ সিনেমার মধ্যদিয়ে পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেতার অস্কার জিতলেন তিনি।

রোববার লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের জমকালো আসর বসে। তাতে সেরা পার্শ অভিনেতার পুরস্কার জেতেন কোয়ান, এক চীনা-আমেরিকান পরিবারের গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাটিতে ‘ওয়েমন্ড ওয়াং’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য।

পুরস্কার ঘোষণার পর ৫১ বছর বয়সী এ অভিনেতা অস্কারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “অনেকেই ভাবেন এই ধরনের গল্প শুধু সিনেমাতেই ঘটে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এটা আমার সাথে ঘটছে। এটি একটি আমেরিকান স্বপ্ন।

“একটি নৌকায় যাত্রা শুরু হয়েছিল আমার। আমি শরণার্থী শিবিরে এক বছর কাটিয়েছি এবং কোনোভাবে হলিউডের সবচেয়ে বড় মঞ্চে এসে সেই যাত্রা শেষ করেছি।”

শৈশবে ভিয়েতনাম থেকে শরণার্থী হিসাবে হংকং আসেন কোয়ান, তারপরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন।

১৯৮৪ সালে ‘ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য টেম্পল অব ডুম’-এ পিকপকেট শর্ট রাউন্ডে আসার সুবাদে একটি অডিশনের সুযোগ পান কোয়েন। সেখান থেকে নির্বাচিত হয়ে পরের বছর ‘দ্য গুনিজ’ এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন।

বড় হওয়ার সঙ্গে অভিনয় থেকে দূরে সরে গিয়ে একজন স্টান্ট সমন্বয়কারী ও সহকারী পরিচালক হিসাবে পর্দার পেছনে কাজ করেন কোয়েন।

Also Read: অস্কারে ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যারের’ জয়জয়কার

পরবর্তীকালে জন এম চু পরিচালিত কমেডি সিনেমা ‘ক্রেজি রিচ এশিয়ান’ থেকে পুনর্বার অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের স্বপ্নের পেছনে ছোটার সিদ্ধান্ত নেন। ৫০ বছরে পা দেওয়ার পর একজন এজেন্ট বন্ধুর সহযোগিতায় ‘এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’র তরীতে ভেড়েন তিনি।

পুরস্কার গ্রহণের পর মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কোয়ান বলেন, “আমার মায়ের বয়স ৮৪ বছর। তিনি নিশ্চয়ই বাড়িতে বসে আমাকে দেখছেন। মা, আমি এইমাত্র একটি অস্কার জিতেছি।”

স্ত্রী ও ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে বলেন, “আমার জীবনের ভালবাসার মানুষেরা, যারা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, ২০ বছর ধরে আমাকে বলে আসছেন যে আমারও সময় আসবে।”

দর্শকদের যার যার স্বপ্নের প্রতি বিশ্বাস রেখে তা জিইয়ে রাখার পরামর্শ দেন অস্কারজয়ী এই অভিনেতা।

অস্কারে সেরা পার্শ্ব-অভিনেতার বিভাগে আরও মনোনয়ন পেয়েছিলেন ‘দ্য বানশিজ অব ইনিশেরিন’ সিনেমার ব্রেন্ডন গ্লিসন, ‘কজওয়ে’ সিনেমার ব্রায়ান টাইরি হেনরি এবং ও ‘দ্য ফেবলসম্যান’র জুড হিরশ। তাদের ডিঙিয়ে মুকুট নিলেন কোয়ান।

এবার ১১ বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে সব মিলিয়ে মোট সাতটি অস্কার জমা হয়েছে এভরিথিং এভরিহোয়্যারের ঝুলিতে।

দুই নির্মাতা ড্যানিয়েল কোয়ান ও ড্যানিয়েল শাইনার্ট পেয়েছেন সেরা পরিচালকের পুরস্কার। মিশেল ইয়ো পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। পার্শ্বচরিত্রের দুটি পুরস্কারই গেছে এই সিনেমার দুই কুশলীর হাতে। জেমি লি কার্টিস পেয়েছেন পার্শ্বচরিত্রের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।