স্বল্প পুঁজির অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ২৫ হাজার থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টার থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Published : 22 Nov 2022, 11:42 PM
অতি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের চলতি মূলধন ও ব্যবসা খাতে দেওয়া ঋণও ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম’ সুবিধার আওতায় আনল বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নির্দেশনায় এ খাতের উদ্যোক্তাদের দেওয়া জামানতবিহীন ও জামানতসহ সব ধরনের ঋণকে এ সুবিধার অন্তর্ভূক্ত করেছে।
এর আগে প্রথম পর্যায়ে এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের চলতি মূলধন হিসেবে দেওয়া ঋণ ও মেয়াদি ঋণের বিপরীতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সুবিধা পেত।
পরে গত আগস্টে মাঝারি আকারের শিল্পের মেয়াদী ঋণেও এ সুবিধা দেওয়া হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সিএমএসএমই খাতে দেওয়া সর্রনিম্ন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সুবিধা দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জামানত থাকে না বলে অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়নে তহবিল থেকে ঋণ দেয় না ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোকে এমন জামানতবিহীন সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের ঋণের গ্যারান্টি দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করে।
গত ১৯ জুলাই মাইক্রো, ক্ষুদ্র, কুটির এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়নে স্কিম গঠন করা হয়। শুধু এ পুনঃঅর্থায়নে তহবিলের ক্ষেত্রে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সুবিধাটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে ঋণসীমা
ক) কুটির ও মাইক্রো উদ্যোগের উৎপাদনশীল ও সেবা শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার হতে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা;
খ) ক্ষুদ্র উদ্যোগের উৎপাদনশীল শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ১ লাখ হতে সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকা এবং সেবা শিল্প খাতে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার হতে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা;
গ) মাঝারি উদ্যোগের উৎপাদনশীল শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ১ লাখ হতে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা। আর সেবা শিল্প খাতে সর্বনিম্ন ১ লাখ হতে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা;
ঘ) মাইক্রো উদ্যোগের ব্যবসা খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার হতে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা এবং ব্যবসা খাতে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার হতে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা।
করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ২০২০ সালের জুলাইতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র (সিএমএস) উদ্যোগের জন্য জামানতবিহীন ঋণ দিতে উৎসাহ দিতে সর্বপ্রথম ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের নীতিমালা ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও মহামারীকালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ছোট ঋণ বিতরণে এগিয়ে না আসায় এই ঋণের ঝুঁকির ভাগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য তখন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম বা ঋণ নিশ্চয়তা স্কিম নামে তহবিল গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ দেওয়ার পর তা আদায় না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল ঋণের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধ করবে এ স্কিমের আওতায়।
তবে যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা এ সুবিধা পাবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।