আগামী জুন মাসে ভারত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে একথা জানান তিনি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য ভারত অংশে ৫ কিলোমিটারসহ প্রায় ১৩১ দশমিক ৫ কিলোমিটার ‘ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ নির্মাণ করা হয়েছে।
“এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির প্রি-কমিশনিং কার্যক্রম চলমান। জুন মাসে ওই পাইপ লাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির কমিশনিং, তথা পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল আমদানি শুরু হবে বলে আশা করা যায়।”
সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, গত বছরের জুন পর্যন্ত দেশে মজুত গ্যাসের পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এদিয়ে প্রায় ১১ বছর দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
সর্বশেষ গত বছরের ১ জুলাইয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী, দেশে মোট উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মজুত ২৮ দশমিক ৫৯ টিসিএফ। গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ক্রমপুঞ্জিত গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১৯ দশমিক ৫৩ টিসিএফ। সে হিসেবে উত্তোলনযোগ্য অবশিষ্ট মজুতের পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৬ টিসিএফ।
“গ্যাসক্ষেত্রগুলো হতে দৈনিক গড়ে প্রায় ২২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে বিবেচনায় অবশিষ্ট মজুতকৃত গ্যাস দ্বারা প্রায় ১১ বছর বাংলাদেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে,” বলার পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রী জানান, নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানাকে গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করা অর্থনৈতিক গতিশীলতার স্বার্থে একান্ত অপরিহার্য বিবেচিত হয়। পক্ষান্তরে গৃহস্থালি তথা আবাসিক শ্রেণীতে গ্যাসের সংযোগ প্রদান করা অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
“তাছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে এলপিজির সহজলভ্যতা এবং ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় গৃহস্থালি পর্যায়ে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান পরিপত্রের মাধ্যমে বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃদ্ধি না পেলে এবং শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা হ্রাস না পেলে আবাসিক গ্যাস সংযোগ উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে না।”
সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে এলপিজি গ্যাসের চাহিদা প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ২ শতাংশ পূরণ হয়। অবশিষ্ট চাহিদা বেসরকারি পর্যায়ে পূরণ হয়ে থাকে।
সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ৫টি কয়লা খনির সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ৭ হাজার ৮২৩ ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন।