ভূমিহীনদের আশ্রয়ন সম্প্রসারণ, বরাদ্দ দ্বিগুণ

নির্বাচনকে সামনে রেখে ভূমিহীন হতদরিদ্রদের জন্য ‘আশ্রয়ন প্রকল্প’ সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2013, 05:36 PM
Updated : 13 August 2013, 05:36 PM

একই সঙ্গে প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে, মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে তিন বছর।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনা সচিব ভূইয়া শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার বিডিনউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভূমিহীন ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের আবাসন সুবিধা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করা হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারকে সামনে রেখেই কাজ করছি।”

প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্পটি এর আগে ১৯৯৭ সালে বাস্তবায়িত ‘আশ্রয়ন’ এবং জুলাই ২০০২ থেকে ডিসেম্বর ২০১০ মেয়াদে বাস্তবায়িত ‘আবাসন’ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় প্রণীত হয়েছে।

শুরুতে এটি ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জুলাই ২০১০ থেকে জুন ২০১৪ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মাধ্যমে ৫০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতোমধ্যে ১৪ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

মঙ্গলবারের সভায় প্রকল্পটির মেয়াদ জুন ২০১৭ পর‌্যন্ত বাড়িয়ে প্রাক্কলিত ব্যয় ২ হাজার ২০৪ টাকা নির্ধারণ করে এর প্রথম সংশোধনী অনুমোদন করা হয়। সংশোধিত প্রকল্পের অধীনে আরো ৩৬ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জন্য বিশেষ নকশার ঘর-বাড়িসহ অন্যান্য ভূমিহীনদের জন্য বহুতল পাকা ও আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হবে। ৭০০টি কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভাগীয় সদর দপ্তর, সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা ও পৌরসভায় বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হবে।

এছাড়া নিজস্ব জমি আছে অথচ বাড়ি নেই- এমন সুবিধাভোগীদের জন্য তাদের জমিতে বাড়ি নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে সুবিধাভোগী পরিবারকে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সুবিধা দিয়ে আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। কক্সবাজার এয়ারপোর্ট সম্প্রসারণের কাজে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের পুনর্বাসনের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের কাজও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এছাড়া সভায় ‘চামড়া শিল্প নগরী, ঢাকা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। এর আওতায় সাভারের চামড়া শিল্প পার্কে বেসরকারি চামড়া শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য উপযোগী শিল্প প্লটসহ অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করা হবে।

ঢাকার হাজারীবাগের চামড়া শিল্প ইউনিটগুলি এখানে স্থানান্তরিত হবে। কারখানাসমূহের উপজাত বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে প্রক্রিয়াকরণের জন্য এখানে সিইটিপি ও ডা¤িক্সং ইয়ার্ড স্থাপন করা হবে। স্থাপিতব্য শিল্প ইউনিটসমূহে প্রায় ১ লক্ষ লোকের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধারা হয়েছে এক হাজার ৭৯ কোটি টাকা।

সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ অন্য মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা সচিব শফিকুল ইসলাম জানান, সভায় মোট নয়টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এতে ১০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং অবশিষ্ট ৫ হাজার ২৩২ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে মেটানো হবে।