পদ্মা সেতু নির্মাণে দরপত্র ডাকা হলেও সরকারের চলতি মেয়াদে কাজ শুরু করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের।
Published : 26 Jun 2013, 12:30 PM
বুধবার দুপুরে বহু প্রতীক্ষিত এই সেতুর দরপত্র ডাকার পর বিকালে তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দরপত্র আহ্বান করেছি, কিছু কৌশলও নিয়েছি। আশা করি, ঠিকাদাররা আসবে।
“তবে ডিসেম্বরের মধ্যে কাজের অর্ডার দিতে পারবো কি না সন্দেহ আছে।”
তবে পরবর্তী সরকারও যাতে চালিয়ে যেতে পারে, সেই প্রস্তুতি রেখে যাচ্ছেন বলে জানান মুহিত।
“আমরা এমনভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করছি, যাতে পরবর্তীতে যে সরকারই আসুক না কেন, এই কাজটি যাতে অব্যাহতভাবে চলতে পারে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, ঠিকাদারদের আস্থার জন্য সরকার ১২০ কোটি ডলারের আলাদা একাউন্ট খুলবে। যাতে কাজ করলে টাকা পাবে না, এমন কোনো সংশয়ে তারা না ভোগে।
দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে টানাপোড়েনে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় ২৯১ কোটি ডলারের এই প্রকল্পের অর্থ কোথা থেকে আসবে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “কেন রিজার্ভ(বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ) থেকে দেব?
“আমাদের তো এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ আছে। এই বিশাল রিজার্ভ থেকে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার পদ্মা সেতুর জন্য আলাদা একাউন্টে রাখলে কোনো সমস্যা হবে না।”
দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ পর্যবেক্ষণে বিশ্ব ব্যাংক গঠিত প্যানেল ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এবং তা সরকারকেও দিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক প্যানেলের প্রতিবেদনের জবাব দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে মুহিত বলেন, “তাদের রিপোর্ট পাওয়ার ২-৩ দিনের মাথায় জবাব দিয়েছি।”
নিজের জবাবের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার চিঠি তাদের(বিশ্ব ব্যাংকের) ওয়েবসাইটে দিতে বলেছি। যদি তারা না দেয়, তাহলে আমি নিজেই তা জনসম্মুখে প্রকাশ করবো।”
পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আবারো নাকচ করে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। যার কাজই শুরু হয়নি, তার দুর্নীতি হবে কী করে? বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছিলো, তার আভাস থেকে তারা অভিযোগ করেছে।”
সেতুর জন্য ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে এবং এতেও কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করেন মুহিত।
“বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির যে অভিযোগ করেছে, তা অসম্মানজনক, অনভিপ্রেত। বিশ্ব ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তা দুনিয়াকে দেখানোর জন্য এই অসাড় অভিযোগ করেছে,” বলেন তিনি।