অর্থবছর শেষে রেমিটেন্স কমলো ১৫ শতাংশ

প্রবাসীদের পাঠানো আয়ে শেষ পর্যন্ত আর সুখবর মেলেনি; সদ্য সমাপ্ত অর্থবছর শেষে মোট ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2022, 03:55 PM
Updated : 3 July 2022, 07:08 PM

আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিটেন্সে বড় ধরনের উল্লম্ফন হলেও সদ্য শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছর জুড়েই প্রবাসীদের পাঠানো আয় কমেছে, হয়েছে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি। প্রণোদনার পাশাপাশি সরকার নিয়ম শিথিল করলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আসা বাড়েনি।

২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার (২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন), আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ।

এমনকি ঈদের আগের মাসগুলোতে প্রবাসীরা বেশি রেমিটেন্স পাঠালেও সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসেও আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রেমিটেন্স কমেছে।

একক মাস গত জুনে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ১৮৩ কোটি ডলার (১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন), যা আগের বছর একই মাসের চেয়ে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ কম। আগের বছর জুনে এসেছিল ১৯৪ কোটি ডলার (১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন)।

একক মাস হিসেবে গত মে মাসের চেয়েও জুনে রেমিটেন্স কম এসেছে। ওই মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।

রেমিটেন্স কম আসায় গত কয়েক মাস থেকে উচ্চ আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে ডলার সংকটে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। টাকার মান কমে ডলারের বিনিময় হারে রেকর্ড হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে অতীতের মত ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসী আয় বাড়ার বাড়ার আশা করেছিলেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। তবে এবার ১০ জুলাই হতে যাওয়া কোরবানির ঈদের আগে তা হয়নি।

রেমিটেন্স প্রবাহ কমার পেছনে দুটি সমস্যা দেখছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা ‍দুটো জায়গায়, প্রথমত খোলা বাজারের সঙ্গে ব্যাংকের বিনিময় হারের পার্থক্য অনেক বেশি। ডলারে লাভ বেশি খোলা বাজারে। এটি সমন্বয় করতে হবে। সর্বোচ্চ ২ থেকে আড়াই টাকা হতে পারে।

‘‘দ্বিতীয়ত টাকাকে আরও অবমূল্যায়ন হতে দিতে হবে। ধরে রাখলে চলবে না। ব্যাংকের ঋণ সুদহার বাড়াতে হবে। ব্যাবসায়ীরা তো ব্যবসা খুঁজবেন।’’

২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিটেন্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওই সময়টি ছিল অস্বাভাবিক সময় । প্রবাসীরা অনেকে চলে এসেছিলেন। তখন তো ডলারের ব্যবহার ছিল না। সব বন্ধ থাকায় হুন্ডিতেও চাহিদা ছিল না। মানুষ কোথাও যেতে পারেনি তাই ডলারের ব্যবহার হয়নি। সব ডলার ব্যাংকে এসেছে।

‘‘এখন তো যেতে পারছে। তাই ডলারের ব্যবহার বেড়েছে। কয়েক মাস পূর্বেও যদি টাকার মান কমানো হতো তাহলে হয়ত ৯০ টাকায় এসে থেমে যেত। কিন্তু সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় সুফলগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।’’

তবে নতুন অর্থবছরে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।