টানা তৃতীয় বার করপোরেট করে ছাড়, এবার ২.৫% শতাংশ পয়েন্ট

আগের দুই অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় আবারও করপোরেট করে ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; লক্ষ্য মহামারী আর ইউক্রেইন যুদ্ধের পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2022, 09:51 AM
Updated : 9 June 2022, 09:58 AM

বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ পয়েন্ট করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব করেন। তবে কোনো কোম্পানি ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়লে সেটি আরও বেশি ছাড় পাবে।

আগেই দুই অর্থবছরেও আড়াই শতাংশীয় পয়েন্ট হারে এ কর কমানো হয়েছিল। তবে অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘোষণায় এবার কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “সকল প্রকার প্রাপ্তি ও আয় অবশ্যই ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে গৃহীত হতে হবে এবং ১২ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয় ও বিনিয়োগ অবশ্যই ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।”

ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন থেকে কর কমিয়ে করের আওতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কর কমাচ্ছে সরকার।

আগামী অর্থবছর থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিকে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে তা ৩০ শতাংশ।

ব্যবসা সহজীকরণের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ এই কর ছাড়ের মাধ্যমে দেশে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

অপরদিকে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার নেমে আসবে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশে। তবে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ছাড়লে ওই কোম্পানি আরও ছাড় পাবে।

এক্ষেত্রে বলেন, “পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের অধিক শেয়ারের মাধ্যমে হস্তান্তর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

“তবে এক্ষেত্রে ১০ শতাংশ বা এর কম শেয়ার আইপিও এর মাধ্যমে হস্তান্তরকারী লিস্টেড কোম্পানির কর হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।”

তবে কোনো কোম্পানি শর্ত পরিপালন করতে না পারলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।

অপরদিকে রপ্তানি খাতকে আরও উৎসাহিত করতে তৈরি পোশাকসহ সব রপ্তানিমুখী কোম্পানির জন্য ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

আর বস্ত্র খাতের জন্য বিদ্যমান করহার ১৫ শতাংশ চলতি অর্থবছরের শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (মার্চেন্ট ব্যাংক ব্যতীত) করহার কমছে না (আগের মতই ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ), তালিকাভুক্ত না হলে এসব কোম্পানির ক্ষেত্রে আগের মতই ৪০ শতাংশ, সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি হলে আগের মত ৪৫ শতাংশ, তালিকাভুক্ত মোবাইল ফোন কোম্পানি হলে ৪০ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত না হলে ৪৫ শতাংশ কর অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।