মাছ-মাংস, ডিম-দুধ উৎপাদন ও বিপণনে ডিসিদের সহযোগিতা চান মন্ত্রী

পশুখাদ্যে ভেজাল রোধে সতর্ক থাকার পাশাপাশি মাছ-মাংস, ডিম-দুধ উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসকদের সহায়তা চেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2022, 08:21 AM
Updated : 20 Jan 2022, 08:21 AM

বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশের প্রান্তিক সীমা থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত মাছ-মাংস, দুধ-ডিম উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় যত কর্মকাণ্ড আছে, সেখানে জেলা প্রশাসকদের দেখভাল ও তদারকির নির্দেশনা দিয়েছি।

“কারেন্ট জাল বা অন্যান্য জাল দিয়ে মাছ ধরা অথবা পশুখাদ্যে ভেজাল যাতে কেউ দিতে না পারে, মৎস্য উৎপাদন ও পরিবহনের ক্ষেত্রে সরকারের যে পরিকল্পনা আছে সেগুলো বাস্তবায়ন ও কোনো প্রকল্পের অর্থ অপব্যবহার করা না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের সহায়তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।”

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত দপ্তর ও সংস্থাগুলোকে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানানোর কথাও মন্ত্রী বলেন। 

“বাংলাদেশ মাছ-মাংস ও দুধ-ডিম উৎপাদনে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এই ধারাবাহিকতা যাতে অব্যাহত রাখা যায় সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সকল সহযোগিতার জন্য আমরা আশা প্রকাশ করেছি।”

রেজাউল করিম বলেন, “আমাদের মৌলিক জায়গা হচ্ছে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মিঠাপানির মাছে তৃতীয় স্থানে, ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করে সর্বোচ্চ উৎপাদনে। যে মাছগুলো হারিয়ে গিয়েছিলে আমরা কৃত্রিম প্রজননের প্রক্রিয়ার মধ্য থেকে সেই মাছগুলোকে আমরা ফিরিয়ে এনেছি।

“এই সাফল্যে যাতে আমরা ধরে রাখতে পারি সেক্ষেত্রে প্রশাসন যাতে সহায়তা করে সে বিষয়গুলো আমরা তাদের নজরে এনেছি।”

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, “জেলা প্রশাসকদের কিছু প্রস্তাব ছিলে। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় যেসব নৌযানের লাইসেন্স জরুরি না, সেগুলোকে কীভাবে চিহ্নিত  করা যায়; আমরা সেখানে বলেছি বাংলাদেশি সিম্বল দিয়ে আমরা তাদের ডিমার্ক করব। কোনো কোনো এলাকায় আধুনিক শুঁটকি পল্লী করা যায় কিনা সে প্রস্তাবও ছিল, আমরা বলেছি অবশ্যই করা যাবে।

“কোনো এলাকায় নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া যায় কিনা, যে এলাকায় কোনো কাজ চলছে তার ধরন পরিবর্তন করা যায় কিনা বা প্রশাসনকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় সে ব্যাপারে আমরা বলেছি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “তারা যেটা প্রত্যাশ্যা করেছে তার অধিকাংশগুলো আমাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে যেটা আইনে নেই। একটা প্রস্তাব ছিল সকল নৌযানকে লাইসেন্স দেওয়া যায় কিনা। এখন সকল নৌযান বলতে কিন্তু ছোট ছোট নৌযান আছে, তাদের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান নেই। আমাদের মৎস্য আইন রয়েছে, সমুদ্র আইনও রয়েছে। আইনের বাইরে গিয়ে আমরা কিছু করব না।

“তবে আইন না থাকলেও নীতিগতভাবে, প্রশাসনিকভাবে যে সকল বিষয়গুলো প্রয়োজনীয়, সে বিষয়গুলো তারা যাতে গ্রহণ করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা মতামত দিয়েছি।”

জেলেদের মাছ ধরার বন্ধের সময় সহায়তার ক্ষেত্রে ‘কিছু বৈষম্য হয়’, সেক্ষেত্রে জেলাপ্রশাসকদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকার সময়ে যারা অসুবিধায় পড়তে পারে, তাদের জন্য ভিজিএফের ব্যবস্থা করা হয়েছে, টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতীতে গতানুগতিক অবস্থা ছিল।

“আমি মন্ত্রণালয়ে আসার পর সকল কার্ড আপডেট করেছি, এখন থেকে ২০ বছর আগে যিনি মৎস্যজীবী ছিলেন, তারমধ্যে অনেকে গার্মেন্টসের মালিক হয়ে গেছেন। আবার অনেক অসহায় মৎসজীবীর নামটাই তালিকাভুক্ত হয়নি।

“চলমান একটি প্রক্রিয়া করেছি। সেক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের প্রধান যারা তারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন, যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”