২০২১-২২: প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখল বিশ্ব ব্যাংক

বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির আগের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে এ হার হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2022, 06:41 PM
Updated : 11 Jan 2022, 07:02 PM

মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের সবশেষ ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির এ আভাস দেওয়া হয়।

অর্থনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি বজায় থাকলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার চলতি অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে ৬ দশমিক ৯ হতে পারে বলে এ প্রতিবেদনে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

এর আগে গেল বছর ৭ অক্টোবর প্রকাশিত আগের ষান্মাষিক প্রতিবেদনেও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়তে পারে বলে প্রাক্কলনের তথ্য দিয়েছিল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি।

মহামারীর ধাক্কা সামলে রপ্তানি ও ভোগ ব্যয় বাড়তে শুরু করায় তখন এমন আভাস দিয়েছিল।

চার মাস পর বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে প্রবৃদ্ধির আভাস অপরিবর্তিত রাখল বিশ্ব ব্যাংক।

সরকার চলতি বছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ এর চেয়ে কম প্রবৃদ্ধি অর্জনের পূর্বাভাস দিয়েছে।

তবে মহামারীর বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ীই বাড়বে অর্থনীতির আকার বলে আশার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।

গত ২০ ডিসেম্বর তিনি এসব উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে ‘রক্ষণশীল’ মন্তব্য করে বলেন রপ্তানি বাড়াসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের তথ্য দিয়ে লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে একটু বাড়িয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।

ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার অপেক্ষা।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ বলছে, সংক্রমণের হার কমে আসায় এবং সরকারের অনুকূল নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকায় চলতি অর্থবছরে এ হার হবে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

সংস্থাটি গত ১৯ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর কথা জানায়।

মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের জুন পর্যন্ত প্রাক্কলনে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ব্যয় ও ভোগ বাড়ার পাশাপাশি সেবা খাতের কার্যক্রম বাড়া এবং তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে শক্তিশালী রপ্তানি আয় অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে; যা প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।

এ সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ভারসাম্যের মুখোমুখি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রাক্কলন করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

তবে নতুন করে কোভিডের বিস্তারে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধীর গতি দেখা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

মহামারী থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ভাইরাসের নতুন সংক্রমণে তা ২০২২ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে।