মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার: এ মাসেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে, আশা মন্ত্রীর

তিন বছর বিরতির পর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে মালয়েশিয়া সরকারের অনুমোদনের পর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদের আশা এ মাসের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2021, 08:06 PM
Updated : 10 Dec 2021, 08:37 PM

শ্রমবাজার খোলার সম্ভাবনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমি তো আশা করেছিলাম আরও এক মাস আগে। তখন যেহেতু হয়নি, এবার হয়ত এ মাসের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।“

শুক্রবার মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আবার শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাকে ফোনে জানিয়েছেন বলে জানান ইমরান আহমেদ।

রাতে সিলেট সার্কিট হাউসে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্মাণ, প্লান্টেশন, ফ্যাক্টরি সবগুলো এক সঙ্গে খুলে দেওয়া হচ্ছে। এমননি নতুন সেক্টর হিসাবে হাউজহোল্ড বা গৃহকর্মীর বিষয়টিও খুলে দেওয়া হয়েছে।

“আমার বিশ্বাস অতীতে মালয়েশিয়াতে যত কর্মসংস্থান হয়েছিল এবার হয়তো আরও বেশি হবে।“

মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোও বলছে, আবারও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের (এমওইউ) প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার।

শুক্রবার মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে বার্তা সংস্থা বারনামার বরাত দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের সঙ্গে তিনি এমওইউতে সই করবেন। চুক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী প্রবেশ শুরু হবে।

সিলেট সার্কিট হাউসে ইমরান আহমেদ বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি উনাদের মন্ত্রিসাহেবও আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ফোন করেছেন। উনারা বলেছেন, যে নিষেধাজ্ঞা আগে ছিল সেটা প্রত্যাহার হয়ে গেছে।“

এ বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হলে প্রবাসে থাকা অনেক শ্রমিকের মতো মালয়েশিয়া থেকেও ফিরে আসেন অনেক বাংলাদেশি।

এখনও তাদের ফেরার কোনো সুরাহা হয়নি। মালয়েশিয়া নিজেদের নাগরিক ছাড়া অন্য কাউকে বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে না।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় ৬ লাখের মতো বাংলাদেশি থাকেন। তাদের কাছ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১২৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়েছিল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ইমরান আহমেদ।

এ প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এটার সঙ্গে লেগে ছিলাম। মাঝখানে কোভিডের কারণে দুই বছর পেছনে পড়ে গেলাম। মন্ত্রণালয়ের যারাই এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন সবাই এর পেছনে লেগে ছিলেন।

“আজকে গিয়ে ফাইনালি কাজটা হলো। গত দুই মাসে আমাদের অনেক ইন্টারেকশন হয়েছে। সে কারণে আজকে রেজাল্টটা পেলাম। “

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান এক বিবৃতিতে বলেন, রাবার বাগান, কৃষি, শিল্প, সেবা, খনি ও পাথর আহরণ, নির্মাণ ও গৃহস্থালি সেবাসহ বিভিন্ন খাত বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

শুধু রাবার বাগানে বিদেশি কর্মী নিয়োগের আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সব খাত উন্মুক্ত করার প্রস্তাবও সরকার অনুমোদন দিয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে মহামারীর মধ্যে কোয়ারেন্টিনসহ সকল স্বাস্থ্য বিধি মানার ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না বলে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী সতর্ক করেছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো সারাভানানকে উদ্ধৃত করে এর আগে বলেছে, স্থানীয়দের আগ্রহ না থাকায় নোংরা, বিপদজন ও কঠিন কাজগুলোতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।

এসব কাজের মধ্যে আছে রাবার বাগান, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ ও সেবা খাত।

আরও পড়ুন: