সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে বেশি লাভ করতে পারছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “ইন্টারেস্ট যখন ১৫ শতাংশ পেতেন, তখন লাভ কী হয়েছে? গত ৭ বছরে ইনফ্লাশন রেট ৫ এর ওপরে যাচ্ছে না। আমাদের মতো স্টেবল ইনফ্লাশন রেট খুব কম দেশে আছে।
“বিশ্বের কোথাও কোথাও কোনো ব্যাংকে যদি টাকা রাখেন, সেখান থেকে কোনো ইন্টারেস্ট পাওয়া যায় না। বরং আরও ইন্টারেস্ট দিতে হয়। আমাদের লোকজন যারা বিদেশে ব্যবসা বাণিজ্য করছে, তারাও বিদেশে টাকা না রেখে দেশের ব্যাংকগুলোতে রাখে।”
সুদের হার বেঁধে দেওয়া নিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “ইন্টারেস্ট রেট ৬ শতাংশ বা ৯ শতাংশ তাদের জন্য দিয়েছিলাম। সেটা আমরা দিয়েছিলাম আমাদের বিবেচনায় নয়, সারা বিশ্বের বিবেচনায়। কারণ আমরাও তো কোন না কোনভাবে সারা বিশ্বের অংশ।
“এখন বিদেশে ইন্টারেস্ট রেট অনেক কম। সুতরাং কম ইন্টারেস্ট নিয়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ব্যবসা করলে তাদের কস্ট অব প্রোডাকশন কম হবে। তারা প্রতিযোগিতায় আমাদের চেয়ে বেশি সক্ষমতা অর্জন করবে। সেই সব বিবেচনায় আমরা এই ইন্টারেস্ট রেট করে দিয়েছি। এই ইন্টারেস্ট রেটটা এখনও সারাবিশ্বের সবার চাইতে আমাদের ওপরে।”
আমানতে সুদ কম দিয়ে আবার পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত অনেক ব্যাংক ২০ থেকে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিচ্ছে। এটাকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আগে আপনারা সবসময় বলতেন যে ব্যাংকগুলো ডিভিডেন্ড দেয় না। তারা ডিভিডেন্ড এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। এখন যেটা দিচ্ছে আমি মনে করি এটা ভালো।”
ব্যাংক খাত এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “প্রাইভেট সেক্টরের ব্যাংকগুলোর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এ বছর তাদের ব্যালেন্স শিটগুলো বেশ হেলদি। তাদের অ্যাসেট অ্যান্ড লাইবেলিটি ভালো। এসব কারণেই তারা ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে।
পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে থাকলেও লোকসানে থাকা কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এনিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন বিষয়টি দেখবে। পুঁজিবাজারের বেইসিক বিষয় হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতি যখন ভালো হবে, পুঁজিবাজারের অবস্থাও চাঙা থাকবে। যে অসঙ্গতিগুলোর কথা বলা হচ্ছে সেটা সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাবো। উনার সঙ্গে কথা বলব।”
এনবিআরের লোকবল নিয়োগের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি দেখব। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে কথা বলবো। নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রণালয়ের একটি ভূমিকা থাকে। ডিরেক্টলি বা ইনডিরেক্টলি আমাদের যে ভূমিকা রয়েছে সেটা পজিটিভলি বিবেচনায় রাখব।”