সওজের প্রকল্প: ২৩৭ কোটি টাকার ব্যয় ৪৩৯ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব

ঢাকা বাইপাস সড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ৪৮ কিলোমিটারের আরেকটি সড়ক নির্মাণে ২৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের ব্যয় আরও ৪৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

জাফর আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2021, 06:25 PM
Updated : 21 June 2021, 06:25 PM

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন হলে ‘সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্প’ এর ব্যয় বেড়ে হবে প্রায় ৬৭৫ কোটি টাকা।

পাঁচ বছর আগে হাতে নেওয়া চলমান এই প্রকল্পের ব্যয় ১৮৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়াদও চার বছর বাড়িয়ে সংশোধনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন আল রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে।”

ঢাকা বাইপাস সড়কের সহায়তার জন্য হাতে নেওয়া ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি নির্মিত হলে উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের পণ্যবাহী যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করেই সরাসরি চট্টগ্রামের পথে যেতে পারবে।

২০১৬ সালের মার্চে অনুমোদিত সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে শেষ করার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। তবে গত বছর দেশে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরকার এটির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দেয়। শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ২৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এখন এটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানটি।

প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে সওজ অধিদপ্তর বলেছে, প্রকল্পটির জন্য এখন অতিরিক্ত ৫ দশমিক ২২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এরফলে এই খাতে ৪০১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় বাড়াতে হবে।

এছাড়া পরামর্শক খাতে আরও ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, মূল বেতন খাতে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় হিসেবে আরও ১৫ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া ১১৩ দশমিক ৭৩ হেক্টর আন্ত:মন্ত্রণালয় ভূমি হস্তান্তরে ৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পটির ব্যয় ৪৩৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৬৭৪ কোটি টাকায় উন্নীত করে সংশোধনী প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন আল রশিদ বলেন, “প্রকল্প এলাকায় অনেকগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেলওয়ের জায়গা পড়েছে। এছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন অনেক জমি পড়াতে এসব জমি এখন অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে।

“ব্যয় বৃদ্ধির বেশিরভাগ টাকায় জমি অধিগ্রহণে চলে যাবে। তাই প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ছে।“

তিনি আরও বলেন, “প্রকল্পটি জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় পড়ে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে শেষ করতে পারেনি। এখন সকল জটিলতা সমাধান করে দিলে সংশোধিত মেয়াদের মধ্যে শেষ করতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী।”

মূল প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-টাঙ্গাইল জাতীয় মহাসড়ক (এন ৪) এর সঙ্গে জাতীয় মহাসড়ক (এন ১) ঢাকা-চট্টগ্রাম এর এক্সেস কন্ট্রোল সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে।

পাশাপাশি সড়কটি দক্ষিণ এশিয়ার উপ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা করিডোরের অংশ হিসেবে নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরকে সংযুক্ত করবে।

এছাড়া প্রকল্পটির মাধ্যমে নিরাপদ উন্নত ও ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে, যা দেশের সামগ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করবে।