স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘বীর নিবাস’ তৈরি করতে মঙ্গলবার একনেকে ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের এই ‘বীর নিবাস’ উপহার দেওয়া হবে।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন- আল-রশীদ বলেন, “অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভিটামাটি নেই এরকম মুক্তিযোদ্ধা তেমন একটা নেই। যদি ভিটামাটিহীন কোনো মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট ডিসি বা ইউএনও ওই মুক্তিযোদ্ধার জন্য যেন সরকারি খাস জমির ব্যবস্থা করে বীর নিবাস তৈরি করে দেন।”
এসময় তিনি এই প্রকল্পটির আরও কয়েকটি অনুশাসনের কথা তুলে ধরে বলেন, “প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওরা যাতে প্রয়োজনে প্রকল্পের টাকা দ্রুত ছাড় করতে পারেন তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
“প্রকল্পটিতে আগামী অর্থবছর থেকে অর্থায়ন শুরু করার কথা বলা হলেও বাস্তবায়নে যাতে অর্থায়ন চাপে না পড়ে তার জন্য চলতি অর্থবছর থেকেই অর্থছাড় ও কাজ শুরু করতে হবে, যাতে চার অর্থবছর মিলেই টাকাটা ছাড় দেওয়া যায়।”
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অর্থ সরবরাহ বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটির মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনের পরিবর্তে অক্টোবর পর্যন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানান, একনেক বৈঠকে মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মোট মোট ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ১৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৪২ কোটি এবং প্রকল্প সহায়তা খাত থেকে ৫৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার যোগান দেওয়া হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-
>> রাজশাহী কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
>> বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
>> পিরোজপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।
>> শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
>> কন্সট্রাকশন অফ নিউ ১৩২/৩৩ কেভি এন্ড ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন আন্ডার ডিপিডিসি ২য় সংশোধিত প্রকল্প। এতে ব্যয় বেড়েছে ৯২ কোটি ২৫ লাখ টাকা।