অর্থনীতির জন্য এটি একটি ‘সুখবর’ মন্তব্য করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর বলেছেন, আমদানি বাড়া মানে বিনিয়োগ বাড়া, অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার আমদানির যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গতবছরের নভেম্বরে দেশে ৪৮১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে।
আমদানির এই অংক আগের বছরের নভেম্বরের তুলনায় ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে দেশে ৪৩৯ কোটি ২৪ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।
২০২০ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৫৩৩ কোটি ৪১ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল বাংলাদেশ। পরের দুই মাস ফেব্রুয়ারি ও মার্চে আমদানি হয় যথাক্রমে ৪৭২ কোটি ৩৭ লাখ ডলার ও ৪২৭ কোটি ৭২ লাখ ডলারের পণ্য।
এরপরেই লাগে করোনাভাইরাসের মহামারীর ধাক্কা। সেই ধাক্কায় এপ্রিলে আমদানি ব্যয় ২৮৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে নেমে আসে, যা ছিল বহুবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মে ও জুন মাসে যথাক্রমে ৩৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ও ৪৮০ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪২২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়। অগাস্টে হয় ৩৮০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আমদানি খাতে ব্যয় হয় যথাক্রমে ৪৬৫ কোটি ২৫ লাখ এবং ৪৩৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। নভেম্বরে তা ৪৮১ কোটি ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৫৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) চেয়ে ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম।
আহসান মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোভিড-১৯ এর কারণে আমদানি অনেক কমে গিয়েছিল। এখন বাড়তে থাকায় স্বস্তি ফিরে আসছে।
“শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যাপিটাল মেশিনারি (মূলধনী যন্ত্রপাতি), শিল্পের কাঁচামাল, জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানিই কমে গিয়েছিল। এখন সবই বাড়তে শুরু করেছে। এটা একটা ভালো খবর।”
এদিকে আমদানি বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশী মুদ্রার সঞ্চায়নও (রিজার্ভ) খানিকটা কমেছে। বুধবার দিন শেষে রিজার্ভে ছিল ৪২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৩০ ডিসেম্বর অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। ৭ জানুয়ারি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৪২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।