এবার উত্তরণ ঘটবে, আশা অর্থমন্ত্রীর

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সূচকে বাংলাদেশে এগিয়ে আছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে সিডিপির বৈঠক থেকে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশনের বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে তিনি আশাবাদী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2021, 12:35 PM
Updated : 13 Jan 2021, 12:35 PM

কোনো স্বল্পোন্নত দেশকে উন্নত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখভাল করে জাতিসংঘের সংস্থা সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি- সিডিপি।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সভা শেষে এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, “এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমরা এলডিসি গ্রাজুয়েশন অর্জন করতে যাচ্ছি। আমরা তিনটা ক্রাইটেরিয়াই পূরণ করেছি। এবার দ্বিতীয় অ্যাসেসমেন্ট। সুতরাং এবার আমরা নিচু স্তর থেকে উঁচু স্তরে উত্তরণ ঘটাতে পারব। আমি আশাবাদী যে আমরা অর্জন করতে পারব।

“এটি জাতির জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকী এবং পাশাপাশি স্বাধীনতার ৫০ বছর। এই অর্জন জাতির পিতার প্রতি ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করব।”

স্বল্পোন্নত কীভাবে একটি দেশ উন্নত অবস্থানে যায়- জাতিসংঘের সেই নিয়ম প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “জাতিসংঘের একটি সংস্থা কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বিষয়টি দেখভাল করে। তাদেরকে কোনো দেশের ইচ্ছার কথা জানালে তারা ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বসে। তাদের পরামর্শ মতে একটা দেশকে নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে নিয়ে আসা হয়। পরপর দুইটি ত্রিবার্ষিক সভায় ভালো ফলাফল আসলে পরেই ঘোষণা দেওয়া হয়।

“বাংলাদেশ ২০১৮ সালে ভালো করেছে। এবারও ইনডেক্স ভালো। তাই বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটানোর সম্ভাবনা বেশি।”

সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে।

এগুলো হল- মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক (পুষ্টি, স্বাস্থ্য, মৃত্যুহার, স্কুলে ভর্তি ও শিক্ষার হারের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়) এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক (প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক আঘাত, জনসংখ্যার পরিমাণ এবং বিশ্ববাজার থেকে একটি দেশের দূরত্বসহ আটটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়)।

মুস্তফা কামাল বলেন, “অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের জন্য একটি দেশকে কমপক্ষে ৩২ পয়েন্ট অর্জন করতে হয়। এখানে আমাদের পয়েন্ট ২৭.৮। মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ পয়েন্টের বেশি থাকতে হবে। আমাদের আছে ৭৫ পয়েন্ট। একটি দেশের মাথাপিছু আয় থাকতে হবে ১২১০ ডলার। আমাদের আছে ১৬৪০ ডলার। সব মিলিয়ে আমাদের অবস্থান ভালো।”

জাতিসংঘ ১৯৭১ সালে কিছু নির্ণায়কের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে কম উন্নত দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে পৃথকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করে।

১৯৭১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ছিল ২৫; বর্তমানে ৪৬টি হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এ নাগাদ বতসোয়ানা, কেপভার্দে, মালদ্বীপ, সামোয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি ও ভানুয়াতু উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে।