‘খুবই প্রয়োজন’ ছাড়া ব্যয় আপাতত না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

কোভিড-১৯ মহামারীর সংকট কাটিয়ে সুদিন ফিরে না আসা পর্যন্ত ‘অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র’ ছাড়া অন্যান্য ব্যয় স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2020, 12:00 PM
Updated : 7 Sept 2020, 12:00 PM

সোমবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ ২০২০ এর প্রথম পর্বের সভায় বক্তব্যে এই নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাসদর, নৌবাহিনী সদরদপ্তর এবং বিমান বাহিনী সদরদপ্তরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদের সভায় যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খুবই প্রয়োজনীয়… সেটা ছাড়া অন্য ব্যয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রাখব। যদি সুদিন আসে তখন আমরা করব।”

সরকার প্রধান বলেন, “যেখানে যতটুকু সহযোগিতা দেওয়া যায় আমরা সেটা করে যাচ্ছি। যার জন্য বাজেটে কিন্তু আমরা টাকা পয়সা কম দেইনি। কিন্তু ব্যয় করার সময় সকলকে একটু সীমিতভাবে ব্যয় করতে হবে এই কারণে যে, বাজেটে আমরা বরাদ্দ ধরে রেখেছি কিন্তু এই অর্থনৈতিক অবস্থায় কতটুকু অর্থ আমরা সংগ্রহ করতে পারব আর কতটুকু ব্যয় করতে পারব সেখানে আমাদের এখন থেকে হিসেব করে চলতে হবে।

“সেই অনুরোধটা আমি সকলকে করব, আমার সশস্ত্র বাহিনী-তিন বাহিনীকেও আমি বলব।… টাকার যোগানটা আমরা কতটুকু দিতে পারব সেটাও একটা বিষয়। খুবই প্রয়োজনীয় সেটা ছাড়া অন্য ব্যয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রাখব। যদি সুদিন আসে তখন আমরা করব।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাজেট আমরা দিয়েছি। এই বাজেট কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি জানি না ভবিষ্যতে আমরা কতটুকু করতে পারব। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, খুব স্বাভাবিকভাবে আমরা যে বাজেট দেই সেই ভাবে আমরা কিন্তু বাজেটটা দিয়েছি। বাজেটটা দিয়েছি লক্ষ্য আমরা স্থির রেখেছি। এর ভেতরে যতটুকু আমরা অর্জন করতে পারি।

“যদি সারা বিশ্বব্যাপী মন্দা চলতেই থাকে বা খারাপ হয় তাহলে হয়ত পারব না। কিন্তু পারব না বলে আমি পিছিয়ে যেতে রাজি নই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের আয়োজন থাকবে, প্রস্তুতি থাকবে এবং যতটুকু পারি আমরা করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্যই ছিল, বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করব। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আমরা ৮.২ ভাগ অর্জন করব- এটা আমাদের লক্ষ্য ছিল।

“এপ্রিল মাস পর্যন্ত আমরা ৭.৮ ভাগ অর্জনও করেছি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় সেটা ৫.৮ ভাগে নেমে এসেছে। তারপরও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।”

মহামারীর মধ্যেও রিজার্ভ বৃদ্ধির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেকে মনে করেছে রিজার্ভ আমরা ধরে রাখতে পারব না। আল্লাহর রহমতে রিজার্ভ আমাদের বেড়েছে। ৩৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার আমাদের এখন রিজার্ভ। আমাদের রেমিটেন্সও আসছে। সেখানে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি।”

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে করোনার জন্য সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে। খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছি কারণ আমরা শুরু থেকে খুব সজাগ ছিলাম। যা-ই হোক আমাদের দেশে খাদ্যের অভাব যেন না হয়।

“কৃষি কাজ এবং কৃষিতে ভুর্তকি দেওয়া, সব রকম সহযোগিতা করা এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা নেই। এই একটা দিক থেকে আমরা নিশ্চিন্ত আছি যে, আমাদের খাদ্যে কোনো সংকট হবে না। আল্লাহর রহমতে। সেই সংকট আমরা হতে দেব না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খাদ্য নিরাপত্তাটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কথায় বলে পেটে খেলে পিঠে সয়। সেই খাদ্য নিরাপত্তাটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন সচল থাকে তার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি।”

দেশের প্রতিটি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলাতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে বা কোনো জলাভূমি যেন পড়ে না থাকে।”