৯% সুদহার বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরনো সার্কুলার বাতিল

ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ বাস্তবায়নের জন্য আগের একটি সার্কুলার বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2020, 06:04 PM
Updated : 31 August 2020, 06:04 PM

সোমবার এ বিষয়ে নতুন একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নতুন সার্কুলার জারির মধ্য দিয়ে ব্যাংকগুলোকে সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ বাস্তবায়নের জন্য ‘কড়া বার্তা’ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ব্যতীত অন্য যে কোনো ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের ৩০ মের একটি সার্কুলারের ব্যাখ্যা দিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়নে গড়িমসি করছিল কিছু ব্যাংক।

“সে কারণেই ২০১৮ সালের ৩০ মের সার্কুলারটি বাতিল করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে ঋণের সুদহার এক অংকে (১০ শতাংশের নিচে) নামিয়ে আনতেই এটা করা হয়েছে।”

আগের সার্কুলার

‘বিদ্যমান ঋণ হিসাবগুলোর সুদ হারের আকস্মিক ঊর্ধ্বমুখী পরিবর্তনের প্রবণতা পরিহার’ শীর্ষক বাতিল করা সার্কুলারে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় আর্থিক বাজার সুদহারে সাম্প্রতিক বৃদ্ধির সূত্রে নতুন ঋণ মঞ্জুরি ছাড়াও বিদ্যমান ব্যাংক ঋণ হিসাবগুলোতেও আকস্মিক অযৌক্তিক মাত্রায় উচ্চতর সুদহার নির্ধারণের কিছু কিছু দৃষ্টান্ত সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, যা ঋণগ্রহীতাদের পরিশোধ সামর্থ্যের ও আর্থিক সঙ্গতির উপর অনভিপ্রেত চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি বিনিয়োগ ও উৎপাদনের উপর প্রভাব ফেলবে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নতুনভাবে খেলাপি ঋণ সৃষ্টির ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে সব ব্যাংকের জন্য নিচের নির্দেশনাগুলো কার্যকর হবে:

>> কোন ঋণের মঞ্জুরিপত্রে সুদহার অপরিবর্তনশীল (fixed rate) উল্লেখ থাকলে ওই ঋণের সুদহারে সংশ্লিষ্ট ঋণের মেয়াদকালে ঊর্ধ্বমুখী কোন পরিবর্তন করা যাবে না। শুধুমাত্র ঋণের মঞ্জুরিপত্রে সুদহার পরিবর্তনশীল (flexible/variable/floating rate) উল্লেখ থাকলেই ওই ঋণের সুদহারে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনে ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন আনা যাবে-

# ঋণের সুদহার বছরে এক বারের বেশি বৃদ্ধি করা যাবে না।

# ঋণের সুদ হারের কোন বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে কমপক্ষে ৩ মাস আগে নোটিশ প্রদান করতে হবে। গ্রাহককে অবহিত না করে কোন ঋণের সুদহার বৃদ্ধি করা যাবে না।

এবং

# ঋণের সুদ হারের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন মেয়াদি ঋণের বেলায় প্রতিবার অনধিক দশমিক ৫০ শতাংশ এবং চলতি মূলধন ও অন্যান্য ঋণের বেলায় প্রতিবার অনধিক ১ শতাংশ মাত্রায় পরিমিত রাখতে হবে।

নতুন সার্কুলার

সোমবারের সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো কর্তৃক নতুন ঋণ মঞ্জুরি ছাড়াও বিদ্যমান ঋণ হিসাবগুলোতেও অযৌক্তিক মাত্রায় উচ্চতর সুদহার নির্ধারণ রোধ, ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নতুনভাবে খেলাপি ঋণ সৃষ্টির ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৩০ মে’র সার্কুলারে কতিপয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।

“এক্ষণে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জারি করা সার্কুলারের মাধ্যমে ১ এপ্রিল হতে ক্রেডিট কার্ড ব্যতীত অন্যান্য সকল অশ্রেণিকৃত ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রেক্ষাপটে ২০১৮ সালের ওই সার্কুলালের সব নির্দেশনা রহিত করা হল।”

এ নির্দেশনা ২০২০ সালের ১ এপ্রিল হতে কার্যকর হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।