করোনাভাইরাস মহামারীর যে প্রভাব পড়েছে, তাতে করে এক বছর সময় বাড়ানোর পরও গুরুত্বপূর্ণ ‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর’ প্রকল্প শেষ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
Published : 20 Aug 2020, 06:04 PM
বাংলাদেশ রেলওয়ের ছয় হাজার ৫০৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পায়। ছয় বছর মেয়াদী প্রকল্পটি এ বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের রেলপথ পরিবহন উইংয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছরের জুন পর্যন্ত যেসব প্রকল্প ছিল, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সেসব শেষ করতে না পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেগুলোর মেয়াদ এক বছর করে বাড়বে।
“সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই প্রকল্পটিরও মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়েছে,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
কিন্তু বর্ধিত মেয়াদেও কাজ শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রকল্প পরিচালক মো. রমজান আলী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বছরের শুরুর দিকেই করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করে।
“প্রকল্পটির মূল কাজ বাস্তবায়ন করছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। চীনে করোনাভাইরাসের প্রভাব সরাসরি এ প্রকল্পে পড়েছে। অনেক কর্মকর্তা চীনে গিয়ে ফিরে আসতে অনেক দেরি হয়েছে। আবার বাংলাদেশে যখন লকডাউন ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় তখন আরও বেশি প্রভাব পড়ে প্রকল্পটির কাজ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পটি এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।”
নতুন মেয়াদে প্রকল্পটি শেষ করা সম্ভব হবে কীনা জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, “তাতেও সংশয় দেখছি। কারণ বর্ষাকালে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হয়েছে মোট ৬৯ শতাংশ। তাই আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে কীনা তা নিয়েও আমাদের সন্দেহ রয়েছে।”
ঢাকা-চট্টগ্রাম ৩২১ কিলোমিটার রেলপথের ১১৮ কিলোমিটার আগে থেকেই ডাবল লাইন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩১ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাকী ৭২ কিলোমিটার নির্মাণের জন্য এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি শেষ হলে মাত্র সোয়া তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ভ্রমণ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে একাধিক সরাসরি ট্রেনসহ আন্ত:নগর ট্রেন চালু করা যাবে।
পরিকল্পনা কমিশনের রেলপথ অনুবিভাগ জানিয়েছে, ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের ডাবল রেললাইন স্থাপনে অন্য প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় ভৈরব এবং দ্বিতীয় তিতাস সেতু নির্মিত হয়েছে।
বর্তমানে এই পথে ২৩ জোড়া ট্রেন চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এই রুট দিয়ে ৭২ জোড়া ট্রেন এবং পণ্যবাহী কনটেইনার চলাচলের সক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়বে।